দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:২৭
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেছেন, পঞ্চপল্লীর কৃষ্ণনগরে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাকে পুঁজি করে কোনো বিশেষ পক্ষ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে। তারা চেয়েছে যাতে বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ব্যাহত হয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে। এ ঘটনায় দু'জন মারা গেছেন বলে ফেসবুকে গুজব ছড়ানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ মারা যায়নি।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এ কথা বলেন তিনি। জেলা পুলিশের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা নাই। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাই। সরকারের পক্ষ থেকেও নাই।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি। এদের মধ্যে একজন ভ্যানচালক আহত হন। মধুখালী থানার ওসি তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে স্থানীয় হাস্পাতালে এবং পরে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। আমরা তার সাথে কথা বলেছি। এছাড়া মবকে নিয়ন্ত্রণে আনতে যেয়ে পুলিশের শর্টগানের গুলিতে একজন সামান্য আহত হন। তিনিও সুস্থ রয়েছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, কৃষ্ণনগরের ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গৃহিত পদক্ষেপ সম্মন্ধে কোনোরকম সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ ছিল না। তারপরেও যদি কারো কোনো সংশয় থাকতো, কারো কোনো প্রশ্ন থাকতো, তাহলে আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারতো। সেটি না করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে যশোর-মাগুরা রুটের যানবাহন অবরুদ্ধ করে সারাদিন নারী-শিশু ও পুরুষ যাত্রীদের অবর্ণনীয় কষ্ট দেয়া হয়েছে। মধুখালী বাজার থেকে বাগাট পর্যন্ত ৬ থেকে ৭টি স্থানে আগুন জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে তারা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আহত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানবন্ধন ও রাস্তা অবরোধে আনুমানিক ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার মানুষ অংশ নেয়। বিভিন্ন ইউনিট হতে আগত ডিউটিরত পুলিশ শটগান ও গ্যাসগানের ফায়ার করে রাস্তা হতে বিক্ষোভকারী ও বেরিকেড সরিয়ে দেয়। বেলা অনুমান ৩ টা ৩৫ মিনিটের দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। পুলিশের হস্তক্ষেপে রাস্তা হতে মানববন্ধনকারীরা সরে যায়। বর্তমানে ফরিদপুর হতে খুলনাগামী সকল যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় পুলিশের সাথে উত্তেজিত জনতার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় ১২ জন পুলিশ সদস্য ও ৩/৪ জন সাধারণ জনগণ আহত হয়।
পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে নির্মাণ শ্রমিকদের পিটিয়ে হতাহত করার ভিডিও প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, আমরাও সেই ভিডিও দেখেছি। মামলার আলামত হিসেবে সেটি রেকর্ড রাখা হয়েছে। ভিডিওতে সেদিন যাদের ওই কক্ষে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে তাদের প্রত্যেকের নাম পরিচয় আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। এদের মধ্যে উজ্জ্বল ও বিনয় নামে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, বৃহস্পতিবারের ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দু'জন রয়েছেন আদালতে প্রেরণের পর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের কাছে থেকে সেদিনের ঘটনায় যারা যারা জড়িত ছিল তাদের নামও পাওয়া গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা