২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন রানা

পরীক্ষা দিচ্ছেন রানা শেখ - ছবি - নয়া দিগন্ত

বাড়িতে বাবার লাশ। স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে চারপাশ। এমন পরিস্থিতিতে চোখের পানি মুছতে মুছতে হাতে প্রবেশপত্র নিয়ে কেন্দ্রে গেলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী রানা শেখ (১৬)।

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার জুঙ্গুরদি গ্রামের মজিবর শেখের (৪৬) ছেলে রানা। নগরকান্দা সরকারি মহেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) একাডেমি থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ রোববার ভোর রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রানার বাবা মারা যান। সকালে রানার কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা ছিল। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে সকালেই রানার কয়েকজন সহপাঠী তার বাড়িতে যান। অনিচ্ছা সত্ত্বেও সহপাঠীরা সান্ত্বনা দিয়ে রানাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যান। নগরকান্দার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আক্রামুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে রানা কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা দেন।

পরীক্ষা শেষে দুপুরে রানা বাড়িতে ফিরলেই বিকেলে তার বাবা মজিবর শেখের দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে পরিক্ষা সহ-কেন্দ্র সচিব মোঃ মাহাবুব আলী মিঞা জানান, যথাসময়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে রানা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বাবা মারা যাওয়ায় সে অনেকটা ভেঙে পড়েছিল। পরীক্ষা চলাকালে আমরা সার্বক্ষণিক তার খোঁজখবর নিয়েছি।

রানার স্কুল সরকারি এম এন একাডেমির প্রধান শিক্ষক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, সকালেই রানার বাবার মৃত্যুর খবর শুনেছি। এটি খুবই কষ্টদায়ক, কিন্তু সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে। আমরা সকালেই রানার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং তার মনমানসিকতা ভালো রাখতে ও ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে আমরা রানার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছি।

রানার নিকট আত্মীয় মিজানুর রহমান বলেন, সকালেই রানার সহপাঠীরা বাড়িতে আসে এবং তাকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাই। রানার বাবা পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিলেন। হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোবার ভোররাতে তিনি মারা যান। দুই ভাইয়ের মধ্যে রানা সবার ছোট। বড় ভাই হৃদয় শেখ বেকার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে দিশেহারা তার পরিবার।


আরো সংবাদ



premium cement