২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

রাতে ভুট্টাক্ষেতে কাঁদছিল নবজাতক

ভুট্টাক্ষেতে কাঁদছিল নবজাতক। - ছবি : নয়া দিগন্ত

রাত তখন ১১টা। সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক নেই। হঠাৎ নবজাতকের কান্নার আওয়াজে ঘুম ভাঙে গৃহবধূ সোমা আক্তারের। ছিটকিনি খুলে বাইরে বেরিয়ে বুঝতে পারলেন আওয়াজটা আসছে পাশের ভুট্টাক্ষেত থেকে। এত রাতে নির্জন ভুট্টাক্ষেতে নবজাতকের কান্না! সোমা আক্তার ভয় পেয়ে যান। ডেকে তোলেন বাড়ির অন্য নারীদের। পাশের বাড়ির হাজেরা আক্তারকে ডেকে আনলেন। কৌতুহলী সবাই টর্চ নিয়ে গেলেন ভুট্টাক্ষেতে। দেখলেন, বাজারের ব্যাগের ওপর পড়ে আছে এক নবজাতক। ঠান্ডায় কাঁপছে। ফুটফুটে কন্যাশিশুটিকে উদ্ধার করে কোলে তুলে নিলেন হাজেরা। পরে রাতে কদবানু নামে এক নারীর কাছে রাখা হয় ওই নবজাতককে।

বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নের জাল্লাবাদ গ্রামের মালিবাড়ী মোড় এলাকা ঘটনাটি ঘটে। মালিবাড়ির আবুল কালামের ভুট্টাক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

বর্তমানে নবজাতকটি পুলিশ হেফাজতে আছে। কে বা কারা এই নবজাতককে ফেলে রেখে গেছে এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, অবৈধ সম্পর্কের জেরে জন্ম নেয়া নবজাতকটিকে ফেলে রেখে গিয়েছে তার মা। নবজাতককে দত্তক নিতে নিঃসন্তান অনেকেই যোগাযোগ করছেন। বিষয়টি জেলা সমাজসেবা অধিদফতরকেও জানানো হয়েছে।

জাফরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম নয়া দিগন্তকে বলেন, ভুট্টাক্ষেত থেকে স্থানীয়রা নবজাতক উদ্ধার করে আমাকে অবগত করলে বিষয়টি আমি পুলিশকে জানাই।

করিমগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: আনোয়ার হোসেন জানান, উদ্ধার হওয়ার পর শিশুটি রাতে স্থানীয়দের কাছেই ছিল। চেয়ারম্যানের মাধ্যমে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে নিয়ে আসে। পরে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাইফুল আলমের তত্ত্বাবধানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটির শারীরিক পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা জানান তার শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।

আনোয়ার হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘উদ্ধারকারীদের সাথে আমরা কথা বলেছি। তাদের সূত্র ধরে এখন শিশুর মা-বাবাকে খোঁজা হচ্ছে। যদি মা-বাবা খুঁজে না পাওয়া যায়, তাহলে শিশুটিকে কোথায় রাখা হবে আইনের ভিত্তিতে পরে নব্যবস্থা নেয়া হবে।’

শিশুটির শারীরিক কোনো জটিলতা না থাকায় করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তসলিমা নূর হোসেনের নির্দেশে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেনের পারিবারিক পরিচর্যায় রাখা হয়েছে তাকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তসলিমা নূর হোসেন বলেন, ‘নিরাপদ আশ্রয় ও পরিচর্যার জন্য শিশুটি উপজেলা শিশু কল্যাণ পরিষদের তত্ত্বাবধানে আছে। পরে স্থায়ীভাবে লালন-পালনের জন্য দত্তক নিতে আগ্রহীদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে দত্তক দেয়া হবে।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল আলম জানান, দত্তক প্রার্থী না পাওয়া গেলে শিশু কল্যাণ পরিষদের শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র ‘ছোটমনি নিবাস’-এ শিশুটিকে পাঠানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
হাসিনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে যাতে আর কেউ ফ্যাসিবাদী না হয় : রিজভী বানিয়াচংয়ে দানবক্সের টাকা নেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক আইনের শাসন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাসূলের সা. আদর্শ অনুসরণ করতে হবে দেবীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বাগাঁথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস শিক্ষা ও গণমাধ্যমসহ বেশ কিছু সংস্কার কমিশনের পরিকল্পনা রয়েছে : নাহিদ ইসলাম ঢাবিতে গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জলের দাফন সম্পন্ন, বিচার দাবি বাংলাদেশে ‘অলিগার্ক’দের শিল্প কারখানার ভবিষ্যৎ কী দৌলতদিয়ায় ২৬টি অটোরিকশাসহ চোর চক্রের প্রধান গ্রেফতার ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়’ ফিলিস্তিনি নারীদের ধর্ষণের জন্য ইসরাইলে কারাগার!

সকল