এবার সংবাদ প্রকাশ করায় হত্যা মামলার আসামি হলেন সাংবাদিক
- সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৫:৩২
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এক সাংবাদিককে হত্যা মামলায় আসামি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে আলাউদ্দিন গ্রুপ ও সাদেক গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় গত শনিবার আলাউদ্দিন গ্রুপের সমর আলী ও রোববার সাদেক গ্রুপের আলী আহম্মদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ঘটনার পর সোনারগাঁও থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। আলাউদ্দিন গ্রুপের নিহত সমর আলীর ভাই আব্দুল আলী ১৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় একটি দৈনিক পত্রিকার সোনারগাঁও প্রতিনিধিকেও আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক এর প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলমের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ওই সাংবাদিক উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ২৪ জুন আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে শতাধিক কৃষকের স্বাক্ষরিত দৈনিক নতুন সময় পত্রিকায় ‘সোনারগাঁওয়ে কৃষিজমি রক্ষায় কৃষকদের স্মারকলিপি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন। ওই সময় আলাউদ্দিন ওই সাংবাদিককে হামলা-মামলায় জড়ানোর হুমকি দেন। গত শুক্রবার রাতে নয়াগাঁও গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও ১০ থেকে ১২ জন সাংবাদিকের সাথে তথ্য সংগ্রহ করতে যান তিনি। সেখানে আলাউদ্দিন ওই সাংবাদিককে দেখতে পেয়ে পুলিশের সামনেই পুনরায় মামলায় আসামি করার হুমকি দেন। এ বিষয়টি সোনারগাঁও থানার ওসি তদন্ত তবিদুর রহমানকে অবগত করেন তিনি। পরের দিন সকালে পুনরায় ওই গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন তিনি উদ্ভবগঞ্জ বাজারে অবস্থান করেন। সংঘর্ষে আহত সমর আলীকে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি মারা যান। ওই সাংবাদিক তথ্য সংগ্রহ করতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত সমর আলীর ভাই আব্দুল আলী ১৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এ মামলায় ১৭ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শাহজালাল বলেন, ‘আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার জের ধরে হত্যা মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। পুলিশও কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই মামলা নিয়েছেন। আমি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ মামলা থেকে অব্যাহতি ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি করছি। অন্যথায় সত্য সাংবাদিকতা হুমকির মুখে পড়বে বলে বিশ্বাস করি।’
মামলার বাদি মো: আব্দুল আলী বলেন, ‘শাহজালাল এ সংঘর্ষের লাঠিসোঠা জোগানদাতা। তার কারণেই এ সংঘর্ষ হয়েছে। ফলে আমার ভাই মারা গিয়েছে।’
সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, বাদির অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলাটি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ছাড় পাবে না। নির্দোষ হলে এ মামলা থেকে তাকে বাদ দেয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলম জানান, এ মামলায় তদন্তে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত না হলে কোনোভাবেই হয়রানি করা হবে না। তাদেরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা