পুরুষাঙ্গে রশি বেঁধে যুবককে নৃশংস নির্যাতন, গ্রেফতার ইউপি চেয়ারম্যান
- কালুখালী (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা
- ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:০৩, আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:০৯
রাজবাড়ীর কালুখালীতে সালিশে শাস্তি হিসেবে এক যুবককে নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এমন অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে কালুখালী থানা পুলিশ। ওই যুবককে শাস্তি হিসেবে ১০০ জুতার আঘাত ও পুরুষাঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে ইট টানানো হয়েছে বলে জানা যায়। রোববার রাতে পুলিশ রাশেদুল নামে ওই যুবককে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
আটককৃত ইউপি চেয়ারম্যান কালুখালী উপজেলার সাত নম্বর সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মো: শহিদুল ইসলাম আলী ও একই ইউনিয়নের বড়বিলা গ্রামের শফিউদ্দিন শুটকি মন্ডলের ছেলে রায়হন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেলে সাওরাইল ইউপির চর পাতুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পাতুরিয়া গ্রামের ইমান আলী শেখের ছেলে মো: রাশেদুল শেখের বিরুদ্ধে এক নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশে রাশেদুলকে দোষী সাব্যস্ত করে ১০০ জুতার আঘাত ও জরিমানা করা হয়। তবে এ শাস্তিতে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী সন্তুষ্ট হননি। তিনি শাস্তি হিসেবে রাশেদুলের পুরুষাঙ্গে রশি দিয়ে ইট বেঁধে স্কুল মাঠ প্রদক্ষিণ করান। এতে ভুক্তভোগীর পুরুষাঙ্গ কেটে রক্তপাত হতে থাকে। ওই সময় চেয়ারম্যান রাশেদুলকে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তারের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করেন। একপর্যায়ে এ ঘটনা পুলিশকে না জানানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। পরে ভুক্তভোগীকে তার নিজ বাড়িতে চেয়ারম্যানের লোকজন দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
রোববার রাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে কালুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাশেদুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর বাবা রাতে কালুখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওই রাতে সাওরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মো: শহিদুল ইসলাম আলী ও তার সহযোগী একজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
সাওরাইল ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, এমন ঘটনা চেয়ারম্যানের নতুন নয়। তার বিরুদ্ধে এরকম অনেক অভিযোগ রয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলে না।
এ ব্যপারে কালুখালী থানান অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, এটি একটি অমানবিক ঘটনা। নৃসংশ নির্যাতনের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম আলী ও রায়হানকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে ৩২৩, ৩২৬, ৫০৬ ও ১১৪ ধারায় মামলা দায়ের করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।