ভিক্ষুক জয়মালার ভাগ্যে জোটেনি ভাতার কার্ড
- সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১১ অক্টোবর ২০২০, ১৬:০১
বয়স ৬৫ পেরিয়ে ৬৬ ছুঁই ছুঁই। তারপরও ভিক্ষুক জয়মালা বেগম পাননি বয়স্ক ভাতার কার্ড। স্বামীহারা এই বৃদ্ধ বয়সে অর্থের অভাবে নানা সঙ্কটে ভুগছেন তিনি। চিকিৎসা দূরের কথা, তিন বেলা খাবার জোটানোও তার জন্য কষ্টকর।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার দিঘলীয়া ইউনিয়নের চাচিতারা এলাকার বাসিন্দা জয়মালা। এই বৃদ্ধ বয়সে বেঁচে থাকার জন্য তিনি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ঘুরছেন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। শুধু আশ্বাসই মেলে, কয়েক বছর ঘুরেও কেউ তার জন্য একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয়নি।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর বয়স সর্বনিম্ন ৬২ আর পুরুষের বয়স সর্বনিম্ন ৬৫ বছর। সে অনুযায়ী জয়মালা বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও কেউ তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।
ভিক্ষা করে এক ভাতিজাকে লালনপালন করে বড় করেছিলেন জয়মালা। ভাতিজা এখন আর জয়মালার খোঁজ রাখে না। বাধ্য হয়ে জয়মালা গ্রামে গ্রামে ভিক্ষা করেন। জয়মালা আক্ষেপ করে বলেন, ‘বয়স্ক ভাতা, ভিজিডি কার্ডের কোনোটাই পাইনি, কত বয়স হলে বয়স্ক ভাতা (কার্ড) পাইমো বাবা।’
নিঃসন্তান জয়মালার বিয়ের দেড় বছর পর স্বামী অন্যত্র বিয়ে করায় আর সংসার করা হয়নি তার। স্বামী হুটু মিয়া অনেক আগেই মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে বাবার বাড়িতে পড়ে আছেন তিনি। টাকার অভাবে নিজের চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাবারে অনেক দিন ভালো তরকারি (মাছ-গোস্ত) দিয়ে ভাত খাই না। শাকপাতা দিয়ে ভাত খাই। প্যানেল চেয়ারম্যান আমার এক নিকট আত্মীয়ের দিয়ে আমার কাছে চার হাজার টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেয়ায় আমার কার্ড হয়নি।’
দিঘলীয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান মো: বাবুল হোসেন ওই ভিক্ষুকের কাছে টাকা দাবি করার কথা অস্বীকার করে বলেন, ভিক্ষুক জয়মালার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। দ্রুত সময়ে যাতে বয়স্ক ভাতা কার্ড বা অন্য সহায়তা কার্ড পান, সে দিকে নজর থাকবে।
সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম নয়া দিগন্তকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান ভিক্ষুকের কাছে অনৈতিকভাবে টাকা চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই ভিক্ষুকের বয়স্ক ভাতার কার্ড না পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা