কিশোরগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

কিশোরগঞ্জে আবদুর রহমান আমিন নামের গণপূর্ত বিভাগের সাবেক এক কর্মচারী হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার কিশোরগঞ্জের দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, আবুল কাশেম, নজরুল ইসলাম, লিটন মিয়া ও আবদুস সাত্তার। চারজনই করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়নের সিংগুয়া গ্রামের বাসিন্দা।

যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, একই গ্রামের সিরাজ উদ্দিন সিরাজ, খোকন, কান্তু মিয়া এবং বারঘরিয়া ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামের সাহেদ।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবুল কাশেম, নজরুল ইসলাম এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সিরাজ উদ্দিন, এই তিনজন সহোদর। তারা সিংগুয়া গ্রামের মরহুম আবদুল কাদিরের ছেলে।

রায় ঘোষণার সময় মামলার আট আসামির সবাই উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলা গণপূর্ত বিভাগের সাবেক তদারক সহকারী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার কালোপানি বজরা গ্রামের আ: রহমান আমিন চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়নের শিংগুয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ির এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। শিংগুয়া গ্রামের মৃত আ: কাদিরের ছেলে কাশেম, সিরাজ ও নজরুলের সাথে তার বিরোধ ছিল।

২০০৬ সালের ২৩ এপ্রিল ভোরে আসামিরা আব্দুর রহমানের বসতঘরে হামলা করেন। তারা তাকে ছুরিকাঘাতে ও কুপিয়ে হত্যা করেন।
হামলায় আহত হন নিহতের স্ত্রী মোসা: নূরুন্নাহার। এ সময় ঘরের টাকা, স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যান হামলাকারীরা।

এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের স্ত্রী নূরুন্নাহার ওরফে রাবেয়া বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামি করে করিমগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

২০০৮ সালের ২৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো: রফিকুল ইসলাম আট আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়। আদালতে দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রায় ঘোষণা করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কিশোরগঞ্জ জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আবু সাঈদ ইমাম। তিনি বলেন, মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এতে করে মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।

অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অশোক সরকার জানিয়েছেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।