২ মাদরাসাছাত্রকে নির্মম নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষক আটক
- আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা
- ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৫০
ঢাকার আশুলিয়ায় জাবালে নূর মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই শিক্ষার্থীকে বেঁধে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী দুইজন বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম হাফেজ ইব্রাহীম। তিনি কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার দুর্গাপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে। ঘটনাটি জানাজানি হলে সোমবার ওই শিক্ষককে পুলিশ আটক করে।
গত শুক্রবার সকালে মাদরাসার দুই শিক্ষার্থীকে রশি দিয়ে বেঁধে মেঝেতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করেন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। ওই শিক্ষার্থীদের মারধরের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে আশুলিয়া পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষক ইব্রাহীমকে আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলো রাকিবুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। রাকিব ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে চলে যায়। পুলিশ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে। অপরদিকে মাহফুজের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। সে আহত অবস্থায় মাদরাসায় অবস্থান করছিল। পুলিশ উভয়কে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছে।
এলাকাবাসী জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আশুলিয়ার মধুপুর নতুন নগর মথনেরটেক এলাকায় জাবালে নূর মাদরাসায় শিশু শিক্ষার্থী রাকিব ও মাহফুজকে প্রকাশ্যে বেঁধে বেত দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন শিক্ষক ইব্রাহিম।
মাদরাসার শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের শিক্ষক ছাত্র দুই জনকে বেঁধে মারধর করেন। একপর্যায় শিক্ষার্থী দু’জন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় অন্য শিক্ষার্থীরা তাদের সহপাঠীকে মারতে নিষেধ করলেও ওই শিক্ষক বিরামহীনভাবে শিশু দুজনের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এ ঘটনাটি মাদরাসার সিসিটিভি ফুটেজে ধারণ করা হয়।
বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পেরে নিষ্ঠুর ওই শিক্ষকের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
আহত শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলামের বাবা এমদুল ইসলাম বলেন, তার সন্তানকে তিনি হিফজ বিভাগে ভর্তি করেন। তার আশা ছিল সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে সে লেখাপড়া শিখে একজন আলেম হবে। কিন্তু শিক্ষকই যদি নিষ্ঠুর হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে। তার ছেলের সারা শরীরে রক্তাক্ত জখমের ক্ষত রয়েছে। তাকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেছে শিক্ষক ইব্রাহিম। এসময় তার ছেলে পানি চাইলেও তাকে পানি দেয়া হয়নি।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগীদের পরিবারের সাথে কথা বলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়। আহত শিশু রাকিবকে তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।