কালিয়াকৈরে তালাক দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা
- গাজীপুর সংবাদদাতা
- ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:৩৪
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে স্বামীকে তালাক দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করেছে ক্ষুব্ধ স্বামী। বৃহস্পতিবার উপজেলার চন্দ্রার মাটিকাটা রেললাইন ছাপড়া মসজিদ এলাকার একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় স্থানীয়রা রক্তাক্ত ছুরিসহ নিহতের তালাকপ্রাপ্ত স্বামী লিটন শেখকে (২৮) হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। নিহতের নাম সালমা আক্তার (২৫)। সে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বেলতৈল এলাকার শাহ আলমের মেয়ে।
কালিয়াকৈর থানার এসআই আবু সাঈদ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৯ বছর আগে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম রাঘবপুর বোনারপাড়া এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে লিটন শেখের সঙ্গে একই উপজেলার পাশের বেলতৈল গ্রামের সালমা আক্তারের বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের দু’সপ্তাহ পর স্বামীকে তালাক দেন সালমা। পরবর্তীতে উভয়কে বুঝিয়ে পুন:রায় বিয়ে দেন তাদের পরিবার। বিয়ের পর এ দম্পতি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রার মাটিকাটা রেললাইন ছাপড়া মসজিদ এলাকার বাছেদের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সালমা স্থানীয় পল্লীবিদ্যুত হরিণহাটি এলাকার এপেক্স ল্যাঞ্জারী কারখানায় এবং তার স্বামী মৌচাক এলাকার জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস কারখানায় চাকুরি করেন। কয়েক মাস আগে লিটন চাকুরিচ্যুত হন। এ দম্পতির চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
তারা জানান, সম্প্রতি সালমা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন সন্দেহের সৃষ্টি হলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এর জেরে গত ১০ আগস্ট সালমা তার স্বামী লিটনকে তালাক দেন। এতে সালমার উপর ক্ষুব্ধ হন লিটন। এরপর থেকে তারা আলাদা বসবাস করে আসছিলেন। সালমা তার সন্তানকে নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে ছাপড়া মসজিদ এলাকার ভাড়া বাসায় থাকেন। বৃহস্পতিবার সকালে সালমা বাসা থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি কারখানার সামনে পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা লিটন ছুরি নিয়ে সালমার উপর হামলা চালায়। লিটন এসময় জনসম্মুখে সালমার বুকে ও পিঠে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। আহত সালমার চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এসে লিটনকে রক্তাক্ত ছুরিসহ আটক করে উত্তম মধ্যম দেন। এলাকাবাসী সালমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা রক্তমাখা ছুরিসহ লিটনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি জব্দ করা হয়। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহতের বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।