০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, empty
`

ফতুল্লা হোটেলে কুকুরের গোশত সরবরাহ সন্দেহে তুলকালাম

ফতুল্লা হোটেলে কুকুরের গোশত সরবরাহ সন্দেহে তুলকালাম - ছবি : নয়া দিগন্ত

ফতুল্লার পাগলা বাজারে হোটেলে কুকুরের গোশত সরবরাহের অভিযোগে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। এঘটনায় দুই যুবককে মারধর করেছে স্থানীয়রা। ফতুল্লা থানায় এ নিয়ে একটা সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, কুকুরের গোশত সরবরাহ করার অভিযোগটি মিথ্যা। যেখানে কুকুরের গোশতের কথা বলা হচ্ছে মূলত সেগুলো মহিষের গোশত। ভারত থেকে এসব গোশত আমদানি করে হোটেলগুলোতে সরবরাহ করে আসছিল তারা।

জানা গেছে, শনিবার রাত ১টায় পাগলা বাজার এলাকা থেকে গোশতসহ দুই যুবককে আটক করে স্থানীয়রা। এ সময় দুই যুবকের কাছ থেকে ৫০ কেজি গোশত উদ্ধার করা হয়। রাতে ফতুল্লার পাগলা বাজারের বিভিন্ন হোটেলে গোশত সরবরাহ করতে গেলে স্থানীয় জনতা কুকুরের গোশত সন্দেহে দুই যুবককে ধরে গণপিটুনি দেন। এ সময় বস্তায় থাকা গোশতগুলো দুই যুবকের মাথায় তুলে দিয়ে ফেসবুকে লাইভ করা হয়। পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হয় দুই যুবককে। পুলিশ গোশতভর্তি বস্তা নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

পরে জনতার চাপের মুখে পুলিশ তা তুলে নেয় এবং দুই যুবককে থানায় নিয়ে যায়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যুবক স্বীকার করছে এগুলো কুকুরের গোশত।

এলাকাবাসী জানায়, ফতুল্লার পাগলা বাজার এলাকার খাবার হোটেলগুলোতে গরুর গোশতের পরিবর্তে দীর্ঘদিন কুকুরের গোশত রান্না করে খাওয়ানো হয়। একই সঙ্গে কুকুরের গোশতের বিরিয়ানি বিক্রি করা হয়। হোটেলের মালিকরা পাগলা বাজার ও ফতুল্লা থেকে এসব গোশত কেনেন। এ নিয়ে পাগলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ স্থানীয় লোকদের সন্দেহ হয়। শনিবার রাতে দুই যুবক বস্তায় করে ৫০ কেজি গোশত নিয়ে এলে তাদের আটক করা হয়। এতো রাতে গোশত আনা হলো কেন তাদের জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে না পারায় সন্দেহ হয়। পরে তাদের আটক করে মারধর করে পুলিশে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে গোশতগুলো ফেলে দেয়া হয়।

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, পাগলা বাজারে কুকুরের গোশত বিক্রি সন্দেহে দুই যুবককে আটক করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে গোশত সরবরাহকারী দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, তাদের মালিক ভারত থেকে এসব গোশত আমদানি করেছেন। গোশতগুলো বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহ করা হয়। একটি মুসলিম দেশের হোটেলগুলোতে কুকুরের গোশত কেন সরবরাহ করবে- এমনটি জানায় দুই যুবক। মূলত ভারত থেকে মহিষের গোশত আমদানি করে হোটেলগুলোতে সরবরাহ করছিল তারা। মালিকের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, ঘটনাটি যেহেতু স্পর্শকাতর। তাই পশু বিভাগের কর্মকর্তা কামরুজ্জামানকে জানানো হয়েছে। তিনি সোমবার গোশতগুলো যাচাই করবেন। তবে মহিষের গোশতের পরিবর্তে যদি কুকুরের গোশত হয় হবে কেউ পার পাবে না।
তিনি জানান, ঘটনায় একটা সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তবে মারধরের শিকার দুই যুবক কোনো অভিযোগ করেনি।

এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে থাকা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ জানান, শনিবার রাত ১টার সময় দুই যুবক পাগলা বাজারের বিভিন্ন বিরিয়ানির দোকানে গোশত সরবরাহ করতে আসে। এ সময় স্থানীয়রা ওই গোশতকে কুকুরের গোশত বলে অ্যাখ্যা দেয় এবং সরবরাহকারী দুই যুবক আরিফ (২৮) ও রাব্বি (১৬) নামক দুই গোশত সরবরাহকারীকে মারধর করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই যুবককে থানায় নিয়ে আসে।

আশরাফ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পারি ওইগুলো আসলে ভারত থেকে আমদানিকৃত মহিষের গোশত। আমরা তাদের কাগজপত্র ও ওই গোশতগুলো চেক করে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি।


আরো সংবাদ



premium cement