১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ পৌষ ১৪৩১, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দেশে প্রাথমিক থেকেই ইসলামি বা নৈতিক শিক্ষা থাকা উচিত : ড. এম সাখাওয়াত

দেশে প্রাথমিক থেকেই ইসলামি বা নৈতিক শিক্ষা থাকা উচিত : ড. এম সাখাওয়াত - ছবি : নয়া দিগন্ত

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা একটি মুসলিম প্রধান দেশে বসবাস করি। সেখানে ইসলামী আদর্শ বা নৈতিকতা শিক্ষা প্রাথমিক পর্যায় থেকেই শেখা উচিৎ। অতীতে আমরা এমনটাই শিখেছি। অথচ বর্তমানে এর অনুপস্থিতিতে দেশের সমাজ ব্যবস্থার করুন পরিণতি ও মানবীয় চরিত্র গঠনের মানদন্ড ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিনি সেমিনার আয়োজক কর্তৃপক্ষকে অনতিবিলম্বে সরকারের কাছে একটা লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করার অনুরোধ করেন এবং বলেন নৈতিক শিক্ষা ও আদর্শিক মানুষ গঠন করা না গেলে জাতিকে আরোও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হবে।

শুক্রবার শিক্ষা গবেষণা সংসদ ঢাকার উদ্যোগে অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম জুমের ভিডিও কনফারেন্স ও ইউটিউব লাইভের মাধ্যমে ‘শিক্ষা ও নৈতিকতাঃ তত্ত্ব ও প্রয়োগ’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

শিক্ষা গবেষণা সংসদ ঢাকা এর চিফ কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর নূর নবী মানিকের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ও ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (ওআইসি) সহযোগী অধ্যাপক ড. এম আবদুল আজিজ।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কোরবান আলী, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও শিক্ষা গবেষণা সংসদ ঢাকার সভাপতি প্রফেসর এটিএম ফজলুল হক, বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ও দৈনিক দিনকাল পত্রিকার সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, ঢাকার বাদশাহ্ ফয়সল ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ লে. কর্নেল (অব.) একেএম মাকসুদুল হক পিএসসি এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ গুণী শিক্ষাবিদবৃন্দ।

সভাপতির বক্তব্যে প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান বলেন, একজন মুসলমানের সন্তানকে কুরআন অনুযায়ী সামাজিক ও নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার আগ্রহ ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকগণ তা প্রদান করতে পারছেনা। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা কারিকুলামে আজ ইসলাম বা নৈতিক আদর্শমূলক সূচি গুলো খুঁজে খুঁজে বাদ দিয়ে নীতি আদর্শহীন মানুষ তৈরির পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। নানাবিধ বাঁধা ও ষড়যন্ত্রের চাপে ইসলামী শিক্ষা বা নৈতিক আদর্শ সর্বক্ষেত্রে ভুলুন্ঠিত হচ্ছে। যার ফলে প্রচলিত আদর্শহীন শিক্ষা গ্রহণ করে ন্তুন প্রজন্ম পরবর্তীতে ব্যক্তিগত স্বার্থে দুর্ণীতি ও নানাবিধ অন্যায় কাজ অবলিলায় করতে প্ররোচিত হচ্ছে। মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি তথা ভালো কিছুর উপলব্ধি ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া ব্যক্তি চরিত্রে কোন ভাবেই ফুঁটে উঠা সম্ভব নয়। এজন্য চিন্তাধারার সমন্বয় সাধন করার পাশাপাশি ইসলামি জ্ঞান চর্চায় ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্র থেকে সচেতনতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। কুরআন সকল শিক্ষা ও নৈতিকতার আঁধার। জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতম উৎস হচ্ছে এই কুরআন। সুতরাং ইসলামি আদর্শ ও নৈতিকতার বিকাশ সাধন করতে পারলেই প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠা সম্ভব।

প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. এম আবদুল আজিজ বলেন, চলমান বিশ্বে দৃশ্যমান কোনো ধরনের যোগ্যতা ছাড়াই মুষ্টিমেয় ইহুদীরা পুরো পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করছে। কিন্তু কিভাবে? এর মূল কারণটি আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। দিবালোকের মতো সত্য যে, তারা আদর্শহীন শিক্ষা প্রবর্তনের মাধ্যমে যেকোনো দেশ বা জাতি গোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা তথা সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করছে। তাদের সু-দূরপ্রাসারী এই পরিকল্পনা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় জীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে ধর্মীয় অনুভূতির শিক্ষা শিশু মনে জাগ্রত করা এবং নৈতিকতার বিকাশ সাধন করে তাদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার কার্যকরী ব্যাবস্থা করা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement