০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১,
`

দৌলতদিয়ায় দীর্ঘ যানজট, পারাপারের অপেক্ষায় ৫ শতাধিক যানবাহন

দৌলতদিয়ায় দীর্ঘ যানজট, পারাপারের অপেক্ষায় ৫ শতাধিক যানবাহন - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীর কর্মস্থলগামী মানুষের চাপ বেড়েছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে। শ্রক্রবার সকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চরের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত নারী-পুরুষ বাস, ট্রাক ও অন্যান্য ছোট ছোট গাড়িতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে ভিড় করছে।

কারণ আজ শুক্রবারই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ও শনিবার সরকারি অফিসের ছুটি শেষ। আর এসব ছোট গাড়িতে ঝুঁকি নিয়ে ঘাটে আসতে যাত্রীদের ২-৩গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তবে এ ঝুঁকিপূর্ন যাত্রায় নারী-শিশু ও বষস্কদের নিদারুণ কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। তবু শ্রক্রবারের মধ্যেই ঢাকায় ফিরতে হবে সবাইকেই। তাই এতো ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফেরা।

এদিকে মাওয়া ঘাটের ফেরি চলাচল সীমিত থাকায় ওই রুটে সব বাস ও ট্রাক দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে নদী পার হবার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে একযোগে আসায় দৌলতদিয়া ঘাটে এখন তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

পদ্মার তীব্র স্রোত, ঈদের পর কর্মস্থলগামী যাত্রীদের ভিড় ও শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটের বাড়তি যাত্রী ও যানবাহনের চাপে দৌলতদিয়া প্রান্তে যানবাহনের দীর্ঘ সিরিয়াল তৈরি হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া প্রান্তের ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দৌলতদিয়া প্রান্তের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের প্রায় ৪ কিলোমিটার ও রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪ কিলোমিটার এলাকায় যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ শত শত যানবাহন নদী পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে রয়েছে। এরমধ্যে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাই বেশি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন চালক ও যাত্রীরা। সময় যত বাড়ছে যানবাহনের চাপ আরো বাড়বে বলে ধারণা ঘাট কর্তৃপক্ষের।

যানবাহনের যাত্রীরা জানান, এই গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের বাসের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। শীত-বর্ষা সব সময় দৌলতদিয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দীর্ঘ সময় সড়কে অবস্থান করায় বাসে থাকা যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। তবে ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো সরাসরি ফেরিতে উঠে পার হচ্ছে।

যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই যে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলতে সমস্যা হচ্ছে, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। তা হলে কেন এই রুটে নতুন বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ফেরির ব্যবস্থা করে না কর্তৃপক্ষ? আসলে তারা কখনও এভাবে আটকে থাকেন না, তাই ভোগান্তিও বোঝেন না।

বিআইডব্লিউটিসি ঘাট কতৃপক্ষ জানায়, এই রুটের সবগুলো ফেরি প্রায় ২০/২২ বছরের পুরোনো। তাই পুরাতন ফেরিগুলো পদ্মার তীব্র স্রোতের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিকুলে নদী পার হতে সময় লাগছে অনেক বেশি। অনেক সময় ফেরিগুলো মাঝ নদীতে বিকল হয়েও যায়। 

ট্রাকচালকরা জানান, যেখানে তারা আটকে আছেন সেখানে কোনো খাবার ও বাথরুম নেই। এর জন্য অনেক দূরে যেতে হয়। কখন ফেরি পাবেন সেটাও জানেন না। দিনের পর দিন তাদের নদী পারের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এতে তাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে এবং সময় মতো মালামাল পরিবহন করতে না পেরে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যাবস্থাপক আব্দুল্লা রনি জানান, দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌরুটে এখন মাত্র ১৬টি ফেরি চালু আছে। এছাড়া নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ফেরি পার হতে সময় লাগছে দ্বিগুন। এ জন্য দৌলতদিয়া ঘাটে এখন একটু যানজট চলছে।

দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে বাসের সিরিয়াল থাকায় যাত্রীদের পথেই নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়েই যাত্রীরা পায়ে হেটে ফেরি ও লঞ্চে উঠছে। অপরদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট এড়াতে ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী বাস পার হতে রাজবাড়ী পুলিশ প্রশাসন ঘাট থেকে ৮কিলোমিটার দূরে গোয়ালন্দ মোড়ে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া সড়কেই পন্যবাহী ট্রাকগুলো আটকে দিয়েছে। এই যানজট আগামীকাল পর্যন্ত থাকতে পারে বলে ঘাটের ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement