সোনারগাঁওয়ে কোরবানির গোশতের হাট
- সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ০২ আগস্ট ২০২০, ১২:২৪
ঈদের আগের কয়েকদিন পশুর হাট শেষ হলেও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বসেছে কোরবানির গোশতের হাট। উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, কাঁচপুরে এ গোশতের হাট বসেছে। ঈদের দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত স্থায়ী হয় এই হাট। এই হাটের ক্রেতা বিক্রেতা মূলত অসহায়, ছিন্নমূল ও নিম্নবিত্ত মানুষ।
গোশতের হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে যেসব অসহায় দুস্থ মানুষ গোশত সংগ্রহ করে তাদের একটি অংশ এই হাটে গোশত বিক্রি করতে আসে।
এ উপলক্ষে অনেকেই গ্রামের বাড়ি থেকে সোনারগাঁওয়ে ছুটে আসে গোশত সংগ্রহ ও বিক্রি করতে। তারা উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় ও শিল্পনগরী কাঁচপুরে গোশত বিক্রির জন্য বিকেলে ছুটে আসে। ক্রেতা মূলত নিম্ন মধ্যবিত্ত যারা কোরবানি দিতে সক্ষম নয় কিংবা অন্যের কাছে হাত পাততে সংকোচ বোধ করেন। এছাড়াও যারা দিনমজুর, হোটেল ব্যবসায়ী তারাও এই হাট থেকে গোশত কিনেন।
সরেজমিনে ঈদের দিন বিকেলে মোগরপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিকেল ৪টার পর থেকে মানুষ বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে আসতে থাকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে। তাদের দেখাই বুঝা যায় নিতান্তই গরিব। তাদের গায়ে ছিল পুরোনো জামা, আবার অনেকের জামা ছিল ময়লা। তারা উপজেলার বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি বাড়ি ঘুরে এক টুকরো ২ টুকরো করে গোশত জমিয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয়টুকু রেখে বাকিটা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে এসেছে। সেজন্য তারা মোগরাপাড়া চৌরাস্তার বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতে ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। যাদের গোশত দরকার তারা তাদের কাছ থেকে দরদাম করে কিনে নেন। তাদের ওজনে সহায়তা করার জন্য সেসব স্থানে কয়েকজন ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে বসে আছেন। সে জন্য তাদের দিতে হয় ১০টাকা করে।
গোশত বিক্রি করতে আসা শাহিন চান জানান, তিনি সকাল থেকে বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি ঘুরে ৫ কেজির মত গোশত পেয়েছেন। সে সোনারগাঁওয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সব সময় ভিক্ষে করেন। ঈদের দিনও তিনি বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে গোশত তুলেছেন। বাড়িতে ফ্রিজ নেই এত গোশত খেতেও পারবেন না। তাই নিজের যতটুকু দরকার তা রেখে বাকিগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে নিজের যেমন কিছু টাকা আসলো আরেকজন কম দামে কোরবানির গোশত খেতে পারলো।
গোশত কিনতে আসা নাম না প্রকাশ করার এক ক্রেতা জানান, তিনি এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। সামর্থ্য নেই বিধায় কোরবানি করতে পারেনি। তার বাড়িওয়ালাও কোরবানি দেননি। কোরবানির ঈদে গোশত খাবেন না এটা কেমনে হয় তাই পরিবারের জন্য কমদামে তাদের কাছ থেকে কোরবানির গোশত কিনে বাড়িতে নিয়ে পরিবার নিয়ে খাবেন।