২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বয়স্ক ভাতার কার্ড পাননি ৮৩ বছরের শান্ত রাণী

শান্ত রাণী মন্ডল - ছবি : নয়া দিগন্ত

বয়সের ভারে ন্যুব্জ শান্ত রাণী মন্ডল। বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে-শোকে ভুগছেন তিনি। বয়স ৮৩ বছর। চিকিৎসা তো দূরের কথা, তিন বেলা খাবার জোটানোও তার জন্য কষ্টকর। জীবনের শেষ সময়ে একটু সচ্ছলতার আশায় বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ধর্ণা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে। আশ্বাস মিললেও এখনো জোটেনি কার্ড।

শান্ত রাণী মন্ডলের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মোকনা ইউনিয়নের আগদিঘুলিয়া গ্রামে। তার জাতীয় পরিচয়পত্র নং ৯৩১৭৬৬৫১৪৩৫৩২ এবং তার জন্ম তারিখ ১৯৩৭ সালের ২১ মার্চ।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বয়স্ক ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীর বয়স সর্বনিম্ন ৬২ আর পুরুষের বয়স সর্বনিম্ন ৬৫ বছর। সে অনুযায়ী ওই বৃদ্ধা বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্য হলেও এত দিনেও কেউ তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।

সরেজমিনে এলাকাবাসী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শান্ত রাণী মন্ডলের স্বামী অনন্ত চন্দ্র মন্ডল মারা গেছেন প্রায় তিন বছর আগে। সহায়-সম্পদ বলতে স্বামীর রেখে যাওয়া একখণ্ড ভিটাবাড়ি ছাড়া তার তেমন কিছু নেই। যার অর্ধেকের বেশিই ধলেশ্বরী নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

দুই ছেলে ও চার মেয়ের মা শান্ত রাণী মন্ডল। সন্তানরা যার যার মত পৃথক হওয়ায় এখন তিনি তার ছোট ছেলে গণেষ চন্দ্র মন্ডলের বাড়িতে থাকেন।

শান্ত রাণী মন্ডল বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি ছোট ছেলের কাছে থাকি আরেক দিকে গাঙ্গে বাড়ি ভাইঙ্গা যাইতেছে। আমার অন্য ছেলে-মেয়েরা আমারে দেখে না। ছোট ছেলের বউ তার ছেলে মেয়ে নিয়ে কোনোরকম কষ্ট করে চলে। তার ওপর আমারে পালতে ওর অনেক কষ্ট হয়। স্বামী মারা যাওয়ার পর খুব কষ্টে আছি। অসুস্থ হলে ঠিকমতো ওষুধ কিনে খাইতে পারি না। আর কত দিন বাচুম কইবার পারি না। একটু খেয়ে পড়ে চলার জন্য অনেকবার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য গেছি। সবাই খালি কথা দিছে দিমু। কিন্তু এখন অব্দি দেয় নাই।

শান্ত রাণীর ছেলের বউ মায়া রানী মন্ডল (৪০) বলেন, করোনায় উপার্জন প্রায় বন্ধ। দিনপাত না চলায় ধ্যারদেনা করে খুব কষ্টে চলতেছি। তার উপর আবার নদীর ভাঙন। এর মধ্যে অসুস্থ মাকে ওষুধ খাওয়ানো লাগে। বয়স হয়ে যাওয়ায় মা প্রায় সব সময়ই অসুস্থ থাকে। বয়স্ক ভাতার কার্ডটা হলে খুব উপকার হতো।

এ বিষয়ে মোকনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান কোকা বলেন, কয়েক মাস আগে শান্ত রাণী মন্ডলসহ কয়েকজন বয়স্ক মহিলা এসেছিল। সীমিত কার্ড থাকায় সবাইকে দেয়া সম্ভব হয় না। পরবর্তীতে তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেব।

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  ফয়েজুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, ওই বয়স্ক মহিলা নাগরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আবেদন করলে তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement