করোনার প্রভাবে ধামরাইয়ে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
- নবীন চৌধুরী, ধামরাই (ঢাকা)
- ০৩ মে ২০২০, ১৭:২২
সারা দেশের ন্যায় ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে পোল্ট্রি শিল্পের ব্যাপক লোকসান গুনছে ব্যবসায়ীরা। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা এই পোল্ট্রি শিল্প আজ ধ্বংসের পথে। করোনার প্রভাবের কারণে অনেক মুরগির খামার এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। হতাশায় দিন গুনছে পোল্ট্রি খামারিরা। যে কোনো সময়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই শিল্প।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি খামারের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা আনার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া চলতি বছর এমনিতেই মুরগির ব্যবসায় ধরা খেয়ে আছি। তার উপর করোনার প্রভাবে মুরগির দাম একেবারেই কমে গেছে। মানুষের মুরগি কেনার আগ্রহ কমে গেছে। একটি মুরগির বাচ্চা ১ মাস মাস লালন পালন করে বাজারে ছাড়ার সময়ে কেজি প্রতি ১০০ বা ১২০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু এখন আমরা প্রতি কেজি মুরগি খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা করে বিক্রি করতে হয়। তাই আমাদের খুব কষ্ট হয়ে যায়।
এমন দৃশ্য দেখা যায়, উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। হযরত আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী তার নিজস্ব তহবিলে একটি পোল্ট্রি খামার তৈরি করে। পরপর কয়েক বার তিনি খামারে লোকসান গুনছে।
তিনি বলেন, এইবার মুরগির বাচ্চা উঠাতে পরিবারের সবাই না করেছিল। কিন্তু না শুনে আমি আবার মুরগির বাচ্চা খামারে উঠাই। আর এবার তো বলার কিছুই নাই। করোনার প্রভাবে ৬০ টাকা কেজি মুরগি বিক্রি করতে হয়েছে। আর লোকসানের কথা তো বলারই নাই।
উপজেলার গাওয়াইল এলাকার পোল্ট্রি খামারি মো.ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমান পোল্ট্রি খামারের অবস্থা খুবই নাজুক। বেশির ভাগ ব্রয়লার মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক লেয়ার মুরগির খামারও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পুরো উপজেলায় মাত্র ৫০ বা ৫৫ টির মতো লেয়ার মুরগির খামার আছে। আমি গত ৩ মাসে প্রায় ১০ লক্ষ্য টাকা মতো লোকসান হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগিরই মুরগির খামার বন্ধ হয়ে যাবে। এখন শুধু সরকারি প্রনোদনা ছাড়া আর খামার চালানো সম্ভব নয়।
উপজেলার দেপাশাই, শ্রীরামপুর,বান্নাখোলা, সূয়াপুর,গাওয়াইল, জলসিন, কুল্যা, চাপিল এলাকায় বেশ কিছু মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ করোনার প্রভাবোর কারণে পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের অনেকেই নতুন করে খামারে মুরগি তুলা বাদ রেখেছেন। কারণ এর আগের বার মুরগিতে বেশ ক্ষতি হয়েছে। তারপর ও অনেকে নতুন করে লাভের আশায় তাদের খামারে মুরগী উঠান। কিন্তু করোনার কারণে সারা দেশ এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
উপজেলার চাপিল এলাকার মুরগির খামারের মালিক চান মিয়া বলেন, আমার ৩ টি মুরগির খামার ছিল। গতবার বার্ড ফ্লোতে বেশ মুরগি মারা গেছে। তখন ২ টি খামার বন্ধ করে দিয়ে ১ টি খামার শুধু ডিম উৎপাদনের জন্য চালু রেখেছি। কিন্তু এবার এমন সময় আসলো করোনার কারণে মুরগির ডিম কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। করোনা রোগ আসার আগে ১ কেস ডিম ২২০ বা ২৩০ টাকায় বিক্রি করেছি। করোনার কারণে এখন ১ কেস ডিম ১ শত টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কিছুই করার নেই। কত ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। এখন শুধু লোকসান গুনতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইদুর রহমান বলেন, বর্তমানে করোনার কারণে ধামরাইয়ের মুরগির খামারিদের অবস্থা নাজুক, প্রায় সকল খামারিরাই লোকসান গুনছে। তবে সরকার যদি খামারীদের কোনো প্রকার প্রণোদনা দেয়, তখন আমরা ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের মধ্যে তা সুষম বণ্টন করে দেব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা