২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বয়স্ক ভাতা চান শতবর্ষী আয়েশা

বয়স্ক ভাতা চান শতবর্ষী আয়েশা - ছবি : নয়া দিগন্ত

৯২ বছর বয়সী আয়েশা খাতুনের নিজের জমি নেই। থাকেন তিনি অন্যের জমিতে। প্রতিবন্ধী দুই ছেলে আর স্বামী পরিত্যাক্তা এক মেয়েকে নিয়ে বয়সে ন্যূজ্ব আয়েশা খাতুনের সংসার। সংসারে আয় রোজগার করার মত কর্মক্ষম কোন ব্যক্তি না থাকায় খুব কষ্টে চলছে তাদের সংসার। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাহায্য সহযোগীতায় কোনদিন একবেলা, কোনদিন দুইবেলা ভাত জোটে। এত কষ্টের পরেও একটি ভিজিডি বা বিধবা বা বয়স্ক ভাতার কার্ড মেলেনি তার ভাগ্যে। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের বানিপাট্টা গ্রামে পৈত্রিক ভিটায় মৃত ভাই ছিফত উল্লার ছেলে চাঁন মিয়ার বাড়ি থাকেন আয়েশা খাতুন।

আয়েশার জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে কষ্টের গল্প। ১৯৪০ সালে ১২ বছর বয়সে আয়েশার বিয়ে হয় একই উপজেলার পাশ্ববর্তী ডিক্রিরচর গ্রামের দরিদ্র পরিবারের সন্তান খুরশিদ উদ্দিনের সঙ্গে। বিয়ের পর আয়েশার ঘরে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ে জাহানারা ও হেনা সুস্থ থাকলেও ছেলে মমিন ও আমিন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ১৯৬০ সালে স্বামী খুরশিদ এক দুর্ঘটনায় মারা যান। ১৯৬২ সালে দেবর সুরুজ মিয়ার পরামর্শে উন্নত জীবন গড়ার আশায় স্বামীর রেখে যাওয়া সহায় সম্বলটুকু বিক্রি করে ডিক্রিরচর গ্রাম থেকে ছেলে মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে দেবরের সাথে রংপুরে পাড়ি জমান। সেখানে গিয়ে রংপুরে জাহানারা ও হেনার বিয়ে হয়। বছর দুয়েক পর ছোট মেয়ে হেনা দূরারোগ্য রোগে মারা যায় এবং জাহানারা খাতুনকে স্বামী ছেড়ে চলে যান। জাহানারা ফিরে আসেন মায়ের কাছে। রংপুরেও আয়েশার স্বপ্ন পূরন হয়নি। সহায় সম্বলহীন হয়ে ১৯৬৮ সালে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে ফের চলে আসেন পৈত্রিক ভিটায়। সেখানে বর্তমান আশ্রয়দাতা ভাই পুত্র চাঁন মিয়ার ভিটায় একচালা টিনের একটি ছোট্ট ঘর নির্মাণ করেন। সে ঘরেই আয়েশা বর্তমানে বড় মেয়ে জাহানারাকে নিয়ে বাস করছেন। দুই ছেলে প্রতিবন্ধী হওয়ায় বাহাদিয়া গ্রামে ফুফুর বাড়িতে থাকেন। বয়সের ভারে ন্যূজ্ব আয়েশা স্পষ্ট ভাষায় কোন কথা বলতে পারেন না।

মেয়ে জাহানারা খাতুন জানান, মাকে নিয়ে জাহানারা খুবই কষ্টে আছেন। ভাইদের বুদ্ধি না থাকায় কেউ তাদের কোন কাজ দেয় না। তাই ফুফুর বাড়িতে তারা থাকেন। নির্দিষ্ট আয় না থাকায় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের সাহায্য সহযোগীতায় কোনমতে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তাদের। দুই ভাইয়ের মধ্যে কারও কোন প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড নেই। শতবর্ষী মায়েরও কোনও বয়স্ক ভাতা বা বিধবা ভাতার কার্ড নেই। জাহানারারও কোনও বিধবা ভাতার কার্ড নেই। একটি ভাতার কার্ডের জন্য মেম্বারের পিছনে অনেক ঘুরেছেন জাহানারা। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। মেম্বার খালি কয় অইবো-অইবো। এহনো অয় নাই।

সুখিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জল মিয়ার মোবাইলে একাধিকবার চেস্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে সুখিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ হামিদ টিটুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বৃদ্ধা আয়েশা ও মেয়ে জাহানারার কাছে বিধবা বা বয়স্ক ভাতার কার্ড করার জন্য কয়েকবার গিয়েছি। তাদের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র চেয়েছি। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র না দেওয়ায় আমি তাদের ভাতার কার্ড করে দিতে পারছি না।


আরো সংবাদ



premium cement
জনগণ সংস্কার কম বুঝে, আগে জিনিসপত্রের দাম কমান : গয়েশ্বর রায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৮৮৬ চুয়াডাঙ্গায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণের গহনা জব্দ চৌদ্দগ্রাম প্রেসক্লাবের নতুন সভাপতি ফরায়েজী ও সেক্রেটারি বেলাল ফ্যাসিবাদ মোকাবেলায় আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ থাকতে হবে : রফিকুল ইসলাম খান ১৮ বছর পর রামগড়ে জামায়েতের কর্মী ও সুধী সমাবেশ কটিয়াদীতে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু আমাদের রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করেন তারা কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না : শিবির সেক্রেটারি রমজানে বাজার সহনশীল করার চেষ্টা করছি : বাণিজ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রামে ছাত্র আন্দোলনে গুলি : সেই তৌহিদ গ্রেফতার বিয়ের ৪ দিন পর লাশ হলেন নববধূ

সকল