আসল র্যাবের হাতে আটক ৩ ভুয়া র্যাব সদস্য
- সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ২৫ আগস্ট ২০১৯, ১৯:৫১
র্যাব পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে বিজিবির এক পলাতক সৈনিকসহ ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রূপসী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুড়িগ্রাম জেলার উকিলপুর থানার মাসতীবাড়ী দীঘর এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে জয়নাল আবেদীন (২৭), গাজীপুর জেলার সদর থানার জান্দালিয়া পাড়া এলাকার মৃত মুসলেম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হোসেন (২৭) ও কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি থানার চরজাকারিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৯)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ইউনিফর্ম পরিহিত ২টি ছবি (এডিটিং করা), বাংলাদেশ র্যাব লেখা ও র্যাবের মনোগ্রাম সম্বলিত ১টি জ্যাকেট, র্যাব সদর দপ্তরের ভুয়া সীল ও অফিসারদের ভুয়া স্বাক্ষরসহ ৭টি নোটিশ, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা অফিসার, ডিউটি অফিসার ও তদন্তকারী অফিসার নামীয় ৪টি ভুয়া সীল, বিজিবির ১টি আইডি কার্ড, বিজিবির ১ সেট ইউনিফর্ম, ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ১টি মোবাইল ও ১৪টি সীম কার্ড জব্দ করা হয়। রোববার দুপুরে র্যাব-১১ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক কর্ণেল কাজী শমসের উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, র্যাব প্রতারক চক্রের দ্বারা প্রতারিত ভূক্তভোগী একজনের নিকট থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে র্যাব-১১। এতে দেখা যায় উক্ত প্রতারক চক্রটি র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদের সীলমোহর ব্যবহার করে নিজেদের তৈরীকৃত ভুয়া নোটিশ প্রেরণ করে। নোটিশনামায় প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উৎকোচ প্রদানপূর্বক উক্ত অভিযোগ থেকে অব্যাহতি মিলবে এমন আশ্বাস দেয়া হতো। অন্যথায় গ্রেফতার করার ভয় দেখানো হতো।
এ প্রেক্ষিতে শনিবার দিবাগত রাতে উৎকোচ গ্রহণ করার সময় ওৎ পেতে থাকা র্যাব-১১ সদস্যরা তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়- গ্রেফতারকৃত সকলের বর্তমান ঠিকানা গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এলাকায়। উল্লেখিত প্রতারক চক্রের প্রধান আসামি জয়নাল আবেদীন ইতোপূর্বে বিজিবিতে চাকরি করত। বিজিবিতে চাকরিরত অবস্থায় সে ২০১৭ সালে বিজিবি থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বে একটি প্রতারক চক্র সংগঠিত হয়। সে দীর্ঘদিন ধরে বিজিবিতে চাকরি দেয়ার নামে অনেক লোকজনের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।
তারই নেতৃত্বে উক্ত প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আর্থিকভাবে সম্পদশালী লোকদেরকে র্যাবের মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার নামে ও মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় বলে জানা যায়। উক্ত প্রতারক চক্র র্যাব সদর দপ্তরের বিভিন্ন পদবীর নামীয় সীল তৈরী করে তাদের প্রস্তুত করা বিভিন্ন ভুয়া নোটিশে নিজেরাই স্বাক্ষর করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল।
এক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ভুয়া নোটিশগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পৌঁছানো হত। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা জন্য বিজিবির ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি ও র্যাব সদস্যের ছবি এডিটিং করে র্যাবের ইউনিফর্ম পরিহিত ভুয়া ছবি তৈরী করে তারা প্রদর্শন করতো। উক্ত প্রতারক চক্রটি মানুষের শ্রেণী বুঝে কখনো র্যাবের এসআই এবং কখনো ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও জনপ্রতিনিধিদেরকে ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র্যাব-১১ এর অধিনায়ক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা