আশুলিয়ায় নারী শ্রমিককে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ
- তুহিন আহামেদ, আশুলিয়া (ঢাকা)
- ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৯
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় সুবর্ণা আক্তার (৩৫) নামের এক নারী শ্রমিককে কারখানার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো দুই নারী শ্রমিক আহত হয়েছেন। ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে আশুলিয়ার তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার সামনে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। এর আগে, ভোর রাত ৩টার দিকে কারখানা থেকে বের হওয়ার সময় তিন নারীশ্রমিককে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
সুবর্ণা আক্তারের গ্রামের বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জ বলে জানা গেছে।
তিনি বাড়ইপাড়া এলাকায় স্বামী সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় ফিনিশিং কিউসি পদে চাকরি করতেন। আহত দু‘জনের পরিচয় জানা যায়নি। তবে তারা একই কারখানার শ্রমিক।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অভিযোগ করে জানায়, নাইট শিফটে ডিউটি করে রাত ৩টায় পাঁচজন নারী শ্রমিককে ছুটি দেয় কর্তৃপক্ষ। পরে কারখানা থেকে বের হয়ে মহাসাড়কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়িতে জোরপূর্বক ওই পাঁচ শ্রমিককে তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। সকালে একজনের লাশ বাড়ইপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশেই সুবর্ণার লাশ পরে থাকতে দেখে শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করে লাশ নিয়ে কারখানার সামনে আসে এবং আহত দুই নারী শ্রমিককে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠায়। পরে লাশ নিয়ে কারখানার সামনের মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করে। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা লাশ নিয়ে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে এবং বিক্ষোভ করতে থাকে।
শ্রমিকরা অভিযোগ করে আরো বলেন, কোন শ্রমিকের কখন ছুটি হবে তা জানতে পারা যায় না। কখনো রাত ২টায় আবার কখনো ৩টায় ছুটি দেয়া হয়। কখনো দু‘জন শ্রমিককে আবার কখনো পাঁচজন শ্রমিককে ছুটি দেয়া হয়। এগুলা কারখানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে হচ্ছে। তাদের চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান শ্রমিকরা।
এদিকে, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পরে দু‘ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অন্যদিকে, শ্রমিকরা লাশ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বিক্ষোভ করতে থাকার একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে বার বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১-এর পরিচালক মো: মোমিনুল ইসলাম ভুইয়া জানান, তালজিলা কারখানার নারী শ্রমিক সুবর্ণার ডেটবডি পাওয়া গেছে ফ্যাক্টরির পাশে। ধারণা করা হচ্ছে, রোড এক্সিডেন্ট হয়েছে, পা ভাংগা পাওয়া গেছে। তবে বাস্তব কথা ডেট বডি দেখতে দিচ্ছে না শ্রমিকরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে রাস্তা ছেড়ে দেয় শ্রমিকরা। শ্রমিকরা এখনো কারখানার ভেতরে অবস্থান করছে বলেও জানান তিনি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (১২টা ৪০) শ্রমিকরা লাশ নিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান করছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা