আওয়ামী লীগের বড় শত্রু শেখ হাসিনা : আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
- শরীয়তপুর প্রতিনিধি
- ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২০
![](https://www.dailynayadiganta.com/resources/img/article/202502/19690849_167.jpg)
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের শত্রু জামায়াত-বিএনপি বা অন্য কোনো দল না, তাদের বড় শত্রু হচ্ছে শেখ হাসিনা। তিনি সব নেতাকর্মীকে বিপদে ফেলে ভারতে পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগের কারণে বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে পছন্দ করে না।’
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শরীয়তপুর পৌরসভা মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন ‘যারা সংবিধান রচনা করেছিলেন তারা পাকিস্তান গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছিল গণভোটের। তারা সেটাও করেননি। যাত্রাই শুরু করেছি আমরা অবৈধভাবে। সুতরাং সেই সংবিধান কিভাবে বৈধ হতে পারে? তাই ৭২ সালের সংবিধান অবৈধ সংবিধান। ওই সংবিধান আমাদের চেতনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। সংবিধান রচনা করতে হবে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ সংবিধান প্রণয়ন করা নয়। তবে নির্বাচনের জন্য নূন্যতম সংস্কার করতে হবে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। এমন কিছু মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ এমন এক দেশ, যেখানে কখনোই স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা পায়নি। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয়নি, ১৯৭১-এ সংগ্রাম করে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা পূর্ণতা অর্জন করেনি। এরপর ২০২৪-এর স্বাধীনতা বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। কারণ, আমরা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অযোগ্য নেতৃত্ব পেয়েছিলাম।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় এ নায়েবে আমির বলেন, ‘গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু ভুল নেতৃত্বের কারণে আমরা দেখলাম, গণতন্ত্র হত্যা করে তারা বাকশাল কায়েম করল। বাকশালের পরিণতি যে কী হয়েছিল তা এদেশের মানুষ দেখেছে। শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে, আন্দোলনের মুখে এরশাদের পতন হয়েছে। বিগত ১৫ বছরে আমরা জেল জুলুমের শিকার হয়েছি, তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে বলেছি, আল্লাহ হাসিনার পদত্যাগ চেয়েছি। কিন্তু আল্লাহ আমাদের ধৈর্যের ফল হিসেবে শুধু পদত্যাগ না দেশত্যাগ করিয়েছেন।’
সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের বলেন, ‘এখন অনেকে বলেন, এবার জামায়াতকে ক্ষমতায় আনব। আমরা চেয়েছি পদত্যাগ, কিন্তু আল্লাহ মিরাকেল দেখিয়ে করিয়েছেন দেশত্যাগ। এখন যদি সবাই বলে একবার জামায়াতকে দেখব। আল্লাহর মিরাকেলে জামায়াত ক্ষমতায় যেতেও পারে, ইনশা-আল্লাহ। কেননা বাকশাল শেষ, ছয় দফা শেষ, ১৮ দফা পারে নাই, ১৯ দফা পারে নাই। সোনার বাংলা, সবুজ বাংলার স্লোগান বাংলার মানুষের কোনো ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে নাই। এবারের দফা এক দফা। সেই দফা হলো আল্লাহর আইনকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য একবার জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় বসানো।’
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ভাইয়েরা ৫৪ বছর ধরে নির্যাতিত হয়েছেন, ঠকেছেন। আমাদেরকে একবার বিশ্বাস করে দেখেন, ইনশা-আল্লাহ ঠকবেন না। তাতে না হয়, ৫৪ সাথে আর পাঁচ যোগ হবে, এই তো। কিন্তু একবার আমাদেরকে দেন। যদি মনে করেন, জামায়তে ইসলামী নৈতিকতা ও কল্যাণের ভিত্তিতে আদর্শ রাষ্ট্র তৈরি করে নারীর অধিকার, পুরুষের অধিকার, শ্রমিক, মেহনতি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম সবার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তাহলে জামায়াতে ইসলামকে ক্ষমতা দিয়ে দেখেন। ইনশা-আল্লাহ, আমরা আপনাদের আমানত রক্ষা করব।’
শরীয়তপুর জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য ও ডামুড্যা পৌরসভা আমির আতিকুর রহমান কবীর ও জেলা শূরা সদস্য মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের পরিচালনায় জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুর রব হাশেমীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম খান মিলন, শরীয়তপুর-১ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ড. মোশারফ হোসেন মাসুদ, শরীয়তপুর -২ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মো: মাহমুদ হোসেন, শরীয়তপুর-৩ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মো: আজহারুল ইসলাম, ফরিদপুর টিম সদস্য মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, শামসুল ইসলাম আল বরাটি।
অন্যান্যদের মধ্যে ফরিদপুর টিম সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা খলিলুর রহমান, গোপালগঞ্জ জেলা আমির অধ্যাপক রেজাউল করিম, মাদারীপুর জেলা আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও শরীয়তপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির কে এম মকবুল হোসাইন, শরীয়তপুর জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মাসুদুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা