৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬
`

অদম্য নন্দিনীকে আর্থিক অনুদান দিলেন মানিকগঞ্জের ডিসি

- ছবি : নয়া দিগন্ত

অটোরিকশা চালানোর আয়ে পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণে কুলিয়ে উঠতে পারেন না। এর মধ্যে পরিবারের বড় মেয়ে নন্দিনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এমন সাফল্যে আনন্দের পাশাপাশি আছে আশঙ্কা। মেডিক্যালে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে দরিদ্র পরিবারটি।

খবরটি শুনে মানিকগঞ্জের জেলা প্রসাশক (ডিসি) ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা তার অফিসে মঙ্গলবার নন্দিনীর পরিবারের হাতে আর্থিক সহযোগিতার চেক হস্তান্তর করেন।

পরে ডিসি ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘যে যেই অবস্থায় থাকুন আমরা যদি যার যার অবস্থান থেকে মানবতা আর দেশপ্রেম নিয়ে এগিয়ে আসি তাহলে সবই সম্ভব। আমাদের মেধাবীদের এগিয়ে নিতে আমরা সবাই কাজ করব। আমরা এই অদম্য মেধাবীদের দিয়ে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ সাজাব।’

জানা গেছে, নন্দিনী রানী সরকারের বাবা অনিল চন্দ্র সরকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। ছোট ভিটেবাড়ি ছাড়া অনিলের কোনো আবাদি জমিও নেই।

নন্দিনীদের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের গিলন্ড গ্রামে। দু’বোনের মধ্যে নন্দিনী বড়। ছোট বোন বিনা রানী সরকারও মেধাবী শিক্ষার্থী। স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবেন।

গত ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণায় দেখা যায়, মেধা তালিকায় নন্দিনী রানী সরকারের অবস্থান ১৩৩। তালিকা অনুযায়ী, নন্দিনী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নন্দিনী স্থানীয় গিলন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫, কানিজ ফাতেমা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৪ দশমিক ৪৬, এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

কানিজ ফাতেমা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবদুল হালিম বলেন, নন্দিনীকে যাবতীয় সহায়তা স্কুল ও কলেজ থেকে করা হয়েছে। অভাব-অনটনের মধ্যেও মেয়েটি মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় স্কুল ও কলেজের সবাই খুশি হয়েছেন।

নন্দিনীর মা সিমা রানী সরকার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে মেয়েগো ভালো কোনো জামাকাপড় দিতে পারি নাই। প্রাইভেট পড়াতে পারি নাই। স্কুলের মাস্টাররা বিনা বেতনে পড়িয়েছেন, তাগো প্রতি কৃতজ্ঞ। মাস্টাররা সাহায্য-সহযোগিতা না করলে আমার মেয়েও এত দূর আসত পারত না, ভালো রেজাল্ট করতে পারত না। মেডিক্যালে আমার মেয়ে চান্স পাইছে, আমরা যে কত খুশি হইছি! কিন্তু পড়ালেখার খরচের কথা মাথায় আসলে সেই আনন্দ আর থাকে না।’

নন্দিনীর বাবা অনিল চন্দ্র সরকার জানান, ইজিবাইক চালিয়ে উপার্জনের টাকায় দু’মেয়ে, স্ত্রী ও মা-বাবাকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার চালান। কয়েক বছর আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি মারাত্মক আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। সেই সঙ্কটই কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এখন তিনি সুস্থ, তবে এত টাকার খরচ কিভাবে বহন করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে দরিদ্র রোগীদের সেবা করার স্বপ্ন নন্দিনীর। তিনি বলেন, ‘স্কুল ও কলেজে স্যাররা আমাকে বিনা বেতনে পড়িয়েছেন। বই থেকে শুরু করে সব সহায়তা পেয়েছি। আমার বাবার তো সামর্থ্য নেই যে এত টাকা দিয়ে পড়াবে। এখন সরকার বা কেউ সাহায্য করলে আমার মেডিক্যালে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আমি যেমন দরিদ্র, অনেক দরিদ্র মানুষ আছে, যারা বিনা চিকিৎসায় মারা যায়, আমি তাদের সাহায্য করতে চাই, সেবা করতে চাই।’


আরো সংবাদ



premium cement
হাসিনার আমলে পাচার ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা ও পৃথক সচিবালয় স্থাপনে একগুচ্ছ প্রস্তাব বিচার ও ক্ষমা চাওয়ার আগে আ’লীগকে কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না : প্রেস সচিব বিএনপির ৩১ দফা মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে : তারেক তারিক সিদ্দিকের সাথে মামলার আসামিও বৈষম্যের শিকার! অন্তর্বর্তী সরকার এখনো অর্থনীতিতে গতি আনতে পারেনি : সিপিডি শিক্ষা প্রশাসনে আওয়ামী প্রেতাত্মাদের থাবা সীমান্ত হত্যা ও অপহরণ বন্ধে আলোচনা হবে ভিন্ন সুরে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হচ্ছে ‘স্কুল ফিডিং’ আনসারের টিডিপি প্রশিক্ষণকে ভারতবিরোধী সামরিক প্রশিক্ষণ হিসেবে প্রচার সম্পূর্ণ মিথ্যা : রিউমার স্ক্যানার আলেমরা উদ্যোক্তা হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে : ধর্ম উপদেষ্টা

সকল