গাজীপুরে বেক্সিমকো কারখানার ঘটনায় আরো ২ মামলা, গ্রেফতার ৩৩
- মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর
- ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:১০
গাজীপুরে বেক্সিমকো কারখানাশ্রমিকদের আন্দোলনে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় কাশিমপুর থানায় আরো দু’টি মামলা মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৩৩ জন। এ নিয়ে একই দিনের ঘটনায় মোট তিনটি মামলা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যা পর্যন্ত আরো ৩৩ গ্রেফতারসহ মোট গ্রেফতারের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৭ জনে।
কাশিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ হওয়া ১৬টি কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকরা গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর, একটি ট্রাক ও তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। তারা স্থানীয় গ্রামীণ ফেব্রিক্স অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনার মধ্যে গ্রামীণ ফেব্রিক্স কারখানার পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার একটি মামলা করেন কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো: তরিকুল ইসলাম। পরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাত ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন বাসের মালিক হাবিবুল্লাহ আকন্দ। এ মামলায় শুক্রবার তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর মহানগর আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পুলিশের উপর হামলা ও কর্তব্যকাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচ হাজারজনকে আসামি করে শিল্প পুলিশের এসআই রফিকুল ইসলাম একই থানায় আরো একটি মামলা করেন।
তিনি আরো জানান, গ্রামীণ ফেব্রিক্স অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার মামলায় শুক্রবার আরো ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে ১০ জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর মহানগর আদালতে পাঠানো হয়। আগামী রোববার তাদের রিমান্ড শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে এ মামলায় বৃহস্পতিবার বিকেলে দু’শ্রমিক নেতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত ওই চারজনকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গাজীপুর মহানগরীর সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় প্রায় ৪২ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা কাজ করেন। ওই কারখানাগুলোর মালিক সালমান এফ রহমান। গত কয়েক মাস ধরে এসব শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এজন্য বকেয়া পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকরা বেশ কয়েকদফা আন্দোলনে নেমে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে সরকার ঋণ দিয়ে শ্রমিকদের আংশিক বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করে।
এদিকে গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেক্সিমকোর শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটির সভার সিদ্ধান্তের পর বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বন্ধ ১৬টি কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকরা বুধবার বিকেলে বিক্ষোভ ও চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় শ্রমিকরা অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাঙচুর এবং একটি ট্রাক, তিনটি বাস ও গ্রামীণ ফেব্রিক অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় অগ্নিসংযোগ করে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা