বেনজীরের সাভানা রিসোর্টে কর ফাঁকির তথ্য পেয়েছে এনবিআর
- গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
- ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৩৮
পালিয়ে যাওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন গোপালগঞ্জের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় চালানো এ অভিযানে রিসোর্টের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর সুনির্দিষ্ট কিছু কর ফাঁকির তথ্য পাওয়ার দাবি করেছে এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানায় তদন্ত দল।
বেনজীর আহমেদ ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত র্যাবের মহাপরিচালক এবং ২০২০ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক থাকাকালীন সময়ে গোপালগঞ্জের বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ একর জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। রিসোর্ট এবং অন্যান্য স্থাপনা মিলে ওই এলাকায় এক হাজার ৪০০ বিঘা জমি বেনজীরের দখলে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল করে এই পার্কটি করেন বেনজীর আহমেদ। গত বছরের জুনে এই পার্কটি আদালতের নির্দেশে ক্রোক করে স্থানীয় প্রশাসন। পার্কটি রিসিভার নিয়োগের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
ঢাকা থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) পরিচালক তারেক ইকবালের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে আসেন। মূলত বেনজীর আহমেদের সম্পদ বিবরণীতে দেয়া তথ্যের সাথে মাঠের বাস্তবতা মিলিয়ে দেখতে এই অভিযান চালায় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)। পার্কের ভেতরে প্রবেশ করে তদন্ত টিম বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখে। পরে পার্কের বিভিন্ন অফিস কক্ষের কম্পিউটারের হার্ডডিক্স ও ফাইলপত্র যাচাই-বাছাই করে তথ্য সংগ্রহ করেন। এ সময় তদন্ত দলটি কর ফাঁকির সত্যতা পায়। তবে কয়েকটি বিভাগের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর কি পরিমাণ কর ফাঁকি দেয়া হয়েছে তা জানাতে পারবেন বলে সাংবাদিকদের জানান সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) উপ-পরিচালক শাহ মো: ফজলে এলাহী।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের উপ-পরিচালক শাহ মো: ফজলে এলাহী বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য এসেছে। সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সাভানা পার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে । তাদের আয়কর নথি যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। আয়কর নথিতে কি পরিমাণ তথ্য দেখানো হয়েছে এবং কি পরিমাণ তথ্য আয়কর নথিতে দেখানো হয়নি সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করেছি। যেটুকু ডকুমেন্ট হস্তগত হয়েছে তাতে বেনজীর আহমেদের এই প্রতিষ্ঠানে বিপুল অঙ্কের আয়কর ফাঁকির সত্যতা আছে। তারপরেও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমাদের আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের কিছু তথ্য সংগ্রহ করতে হবে তাহলেই আমরা বলতে পারব কি পরিমাণ আয়কর ফাঁকির ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কাছে কর ফাঁকির যথেষ্ট প্রমাণ আছে। এখানে বিভিন্ন জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণে কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সাথে কথা বলে আমরা সেগুলো নেব এবং যাচাই-বাছাই করে বলতে পারব যে কি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সাবেক আইজিপির দেশের সকল স্থাপনায় অভিযান চালানো হবে। কর ফাঁকির তথ্য কর বিভাগকে জানানো হবে। সেটার ওপর ভিত্তি করে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ অভিযানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) উপ-পরিচালক মো: জিল্লুর রহমান ও শরীফ মো: ফয়সালসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা