৮০ টাকা দরের ফুলকপি ২ টাকা
- সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ফুলকপি চাষিরা ব্যপক লোকসান গুনছে। লাভের আশা বাদ দিয়ে উৎপাদন খরচ উঠাতে ভ্যানে করে বাজারে আনলেও ভ্যান ভাড়াও উঠছে না চাষিদের। হাটে বাজারে বিক্রেতারা হাক ডাক দিয়ে ক্রেতা জড়ো করলেও বিক্রি হচ্ছে না ফুলকপি। অনেকে বাজারে এনে দায়ে পরায় নামে মাত্র দাম নিয়ে বিক্রি করছে গবাদিপশু পালনকারীদের কাছে।
অন্যদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সার কীটনাশক ব্যবহার করে উৎপাদিত এসব ফুলকপি গবাদিপশুর জন্য কতটা নিরাপদ তা রয়েছে অজানা।
সরেজমিনে একাধিক হাটে দেখা গেছে, ফুলকপি বিক্রেতারা সারি সারি চাটাইবোঝাই ফুলকপি নিয়ে বসে আছে। কেউ কেউ হাক ডাক দিয়ে জোড়া জোড়া ফুলকপি অফার দিয়ে প্রতিযোগিতা করে বিক্রি করছে। ফুলকপির ওজন ও আকার ভেদে জোড়া পাঁচ টাকা থেকে ১০ টাকায় বা তারও কমে বিক্রি করছে। অনেকে চাটাই ধরেই পাইকারি ফুলকপি নামে মাত্র দামদর করলেই দিয়ে দিচ্ছে।
উপজেলার খলিশাডহরা এলাকার ফুলকপি চাষি কামাল হোসেন বলেন, ‘এবার এক বিঘা জমিতে ব্রি ৭৭ জাতের এক হাজার চারা রোপন করে এ পর্যন্ত তার খরচ গুনতে হয়েছে ২৭ হাজার টাকা। তার জমিতে এক একটা ফুলকপির ওজন পাঁচ থেকে সাত কেজি। যার প্রতিটি ফুলকপির মূল্য এক সময় ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কোনো রকম উৎপাদন খরচ ঘরে তোলার জন্য বিক্রি করতে এনেছেন হাটে।
তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত ছয় হাজার সাত শ’ টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। জমিতে যে ফুলকপি আছে সেগুলো বিক্রি করতে পারলে হয়তো আর তিন হাজার টাকার মতো আসতে পারে। এ বছর আর উৎপাদন খরচ উঠবে না বলে আগেই লোকসান মেনে নিয়েছেন তিনি।
এ সময় পাশেই কথা হয় আরেক ফুলকপি চাষি চান মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, তার ২০ শতক জমিতে ফুলকপি চাষ করে এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। দুই টাকা পিস ফুলকপিও নিতে চায় না ক্রেতারা। জমিতে যে ফুলকপি আছে যদি বিক্রি করা যায় তারও সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা বিক্রি হতে পারে।
ফুলকপি ক্রেতা আরমান বলেন, ২২ পিস ফুলকপি ৪০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। নিজেদের খাবারের জন্য কিছু রেখে বাকিগুলো গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করবেন।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৪৯ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষ হয়েছে। বাজারে ফুলকপিসহ নানা রকম সবজির উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় সবজির দাম কমেছে। আগাম সবজি হিসেবে যারা চাষ করেছে তারা লাভবান হয়েছে। চাষিদের লোকসান এড়াতে আগাম সবজি চাষ করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা