ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের মন্দিরে হামলার চক্রান্ত সফল হয়নি : উপদেষ্টা ফারুকী
- সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৪১
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ৫ আগস্টের পরে দেশে অন্যরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ১৫ থেকে ২০দিন দেশের কোথাও পুলিশের ভূমিকা দেখা যায়নি। পুলিশের অনুপস্থিতিতে আমরা মুসলমানরা ওই সময় হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিয়েছি। আমরা নিজেরা নিজেদের মহল্লা পাহারা দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা নিজেরা নিজেদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এটাই মূলত বাংলাদেশ। এটাই বাংলাদেশের স্পিরিট। আমাদের পাশের দেশে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা মন্দিরে হামলা করার পরিকল্পনা করেছিল। সেই হামলার চক্রান্ত আমাদের দেশের মানুষ রুখে দিয়েছে। ফলে সেই চক্রান্ত সফল হয়নি।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হেলাল উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এ কে এম আজাদ সরকার। এসময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সংস্কৃতির বৈচিত্র রক্ষায় সরকারের নানা পরিকল্পনা রয়েছে। লোক কারু শিল্পের শিল্পীদের উৎপাদিত পণ্য সারা বছর যাতে প্রদর্শন ও বিপণনের ব্যবস্থা করা হয়। সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। পানামনগর আমাদের মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। পানাম নগরী ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্ট করার জায়গা। পানাম নগরের পুরনো জরাজীর্ণ ভবনগুলো কীভাবে সংস্কার করা যায় সেটি নিয়েও কাজ করবে মন্ত্রণালয়। পানাম নগরের হেরিটেজ সংরক্ষণ করে ফেলে রাখলে সেগুলো আবার নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এসব স্থাপনা সংরক্ষণের পর হ্যারিটেজ মিউজিয়াম ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে সংস্কৃতি উৎসব ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিচ্ছিন্ন দুই-একটি ঘটনা ঘটছে সেটা আমরা অস্বীকার করছি না। পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা নিয়ে এসব ঘটনার সমাধান করা হবে। বাংলাদেশ বৈচিত্রের জায়গা, বৈচিত্র রক্ষার্থে সরকার কাজ করবে।
তিনি বলেন, আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্য বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশন প্রতিবছরই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করে। ১৯৯১ সাল থেকে নিয়মিতভাবে মাসব্যাপী এ লোকজ মেলার আয়োজন করে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পাঁচজন কারুশিল্পীকে সম্মাননা ও স্বর্ণপদক দেয়া হয়। তাদের মধ্যে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি কোমড় তাঁত শিল্পে নিলাম চিসিন, সোনারগাঁয়ের হাড়িঘোড়া ও মমি পুতুল শিল্পে বীরেন্দ্র চন্দ্র সূত্র ধর ও কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের টেপা পুতুল শিল্পে সুনীল পালকে এক ভরি স্বর্ণ পদক, এক লাখ টাকার চেক ও সম্মাননা দেয়া হয়। এছাড়াও শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীন আজীবন সম্মানা দেয়া হয় সোনারগাঁয়ের নকশি কাঁথা শিল্পে হোসনে আরা ও কুমিল্লার তামা কাঁসা শিল্পে মানিক সরকারকে। তাদের দেড় ভরি স্বর্ণ পদক, তিন লাখ টাকা চেক ও সম্মাননা দেয়া হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা