১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`

আওয়ামী লীগের সাথে আপসের কোনো সুযোগ নেই : প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম - ছবি : নয়া দিগন্ত

আওয়ামী লীগের সাথে আপসের কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শহীদ ও আহতদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। যাদের হাতে এই আন্দোলনের রক্ত, যারা অসংখ্য নিরপরাধ মানুষকে গুম, খুন, নির্যাতন করেছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সেই দোসরদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাদের বিচারের আওতায় আনতে আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই জেনারেশনের পরর্বতী যেকোনো জেনারেশনেও আওয়ামী লীগকে কেউ ক্ষমা করবে না।’

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে 'জুলাই স্মরণে লাল সন্ধ্যা' শিরোনামে রেড জুলাই এবং জাস্টিস ফর জুলাইয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু জুলাই আন্দোলন নয়, বরং বাংলাদেশের সকল গণআন্দোলনের অগ্রসৈনিক। যুগের পর যুগ যা আমরা করতে পারিনি, আমাদের ছোট ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে এবং শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে তা করে দেখিয়েছে। এ ধরনের মহৎ আন্দোলন পৃথিবীতে বিরল।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের লড়াই এখানেই শেষ হয়নি। যতদিন না আমরা সমতার বাংলাদেশ পাবো এবং মানবাধিকার নিশ্চিত হবে, ততদিন আমাদের এই লড়াই চলতে থাকবে।’

এ সময় অনুষ্ঠানে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এর মাটি, ইট আর শিক্ষার্থীদের হৃদয় রক্তের মতোই লাল। প্রতিটি দশকে আমরা রক্ত দিয়ে নতুন দশকের আয়ু কিনেছি।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭০-এর দশকে রক্ষী বাহিনীর হাতে তরুণরা শহীদ হয়েছিল। ১৯৮০-এর দশকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষার্থীরা রক্ত দিয়েছিল। ১৯৯০-এর দশকে দেশী-বিদেশী শক্তি মিলে নাশকতার দায় চাপিয়ে এ দেশের মানুষের ধর্মীয় পরিচিতি এবং জাতীয় পতাকাকে অপমান করেছিল। এখন আর নতুন করে রক্ত দেয়া সম্ভব নয়। আমাদের অর্জন টিকিয়ে রাখতে হবে এবং স্বৈরাচার ও শোষণকে চিরতরে বিদায় জানাতে হবে।’

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। যতদিন ফ্যাসিস্ট খুনিদের বিচার না হয়, ততদিন আমাদের লড়াই চলবে।’

তিনি শহীদ মুগ্ধের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘মুগ্ধ একটু চঞ্চল প্রকৃতির ছিল। আন্দোলনের সময় সে আন্দোলনকারীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করত, কখনো পানি সরবরাহ করে, কখনো পাশে দাঁড়িয়ে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠান আমাদের ঐক্যের শক্তি স্মরণ করিয়ে দেয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে জাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলোকে আমরা আহ্বান জানাই, তারা যেন জাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠু, সুন্দর এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে। এ প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব।’

তিনি আরো বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত শিক্ষা আজ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে আরো শক্তিশালী করার পথে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। তবে, এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, যেগুলো মোকাবেলা করতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অপরিহার্য।’


আরো সংবাদ



premium cement