মধুপুরে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি, অধিক লাভের প্রত্যাশা
- আলকামা সিকদার, মধুপুর (টাংগাইল)
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৩
সবুজ মাঠের বুকে এ যেন এক হলুদের রাজ্য। রাশি রাশি ফুটে আছে সরিষার ফুল। দিগন্ত জোড়া হলুদ আর হলুদ।চারদিকে তাকালে দেখা মেলে হলুদের আভা। মৌ মৌ ঘ্রাণে নেচে উঠে মনপ্রাণ। চারদিকে মৌমাছিদের আনাগোনা মধু সংগ্রহের জন্য। এ যেন অপরূপ এক সৌন্দর্য।
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার দিগন্তজোড়া মাঠে সবুজের মাঝে হলুদ সরিষা ফুল যেন শোভাবর্ধক করে ছড়িয়ে দিচ্ছে আরেক বাড়তি আমেজ। শীতের হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে সুবাস। মধু আহরণে ফুলে ফুলে বসছে মৌমাছিরা। যত দূর চোখ যায় হলুদের সমারোহ।
এ মৌসুমে মধুপুর উপজেলায় রেকর্ড পরিমান জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে কৃষকরা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন। মধুপুর উপজেলায় এবার বারি ১৪, বারি ১৭ ও বিনা ৯ জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে। অন্যান্য ফসল থেকে সরিষার আবাদ করতে খরচ কম হওয়ায় লাভ হয় বেশি। তাই তিন ফসলির তালিকায় স্বল্প সময়ের ফসল হিসেবে এটি মধুপুরে এক বিরাট জায়গা দখল করে নিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, চলতি মৌসুমে সরিষার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২০ হেক্টর। তা অর্জিত হয়ে অতিরিক্ত আরো ৪ শত হেক্টর পেরিয়ে ১৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। শুরুর দিকে সরিষা ক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছিল। কিন্তু কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যা এবং মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহযোগিতার কারণে তা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। এখন কৃষকরা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন গ্রামের মাঠগুলোতে চোখে পড়ার মতো সরিষার আবাদ হয়েছে।
পৌর এলাকার আকাশী ফুলবাড়ী গ্রামের মো: লিটন মিয়া জানান, এ বছর চার বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। প্রতিটি সরিষা গাছে প্রচুর পরিমান ফুল ধরেছে। মনে হচ্ছে, এবার সরিষার ফলন ভালো পাবো। সময়মতো সরিষা তুলে বিক্রি করতে পারলে বাড়তি কিছু টাকা আসবে। এতে পুরোদমে বোরো চাষের খরচা উঠে আসবে।
হাবিবুর রহমান জানান, গত বছর সরিষার দাম ভালো থাকায় এ বছর আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি, ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
একই গ্রামের লুৎফর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে আমি পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষা লাগিয়েছি। এই বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলনের আশা করছি। বাজারেও সরিষার চাহিদা অনেক বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাকিব আল রানা বলেন, চলতি মৌসুমে মধুপুর উপজেলার ব্যাপক সরিষার আবাদ হয়েছে। লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ১৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে পাঁচ থেকে ছয় মন সরিষা ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে নিয়মিত দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ উপজেলায় এবার যে পরিমান চাষ হয়েছে যা গত বছরে তুলনায় ৪০০ হেক্টর বেশি। সরিষা এমন একটি ফসল, যা থেকে তেল, মধু, শাকসবজি সার, এমনকি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। সরিষা ৮০ থেকে ৯০ দিনে উঠে যায়। আগামীতে কিভাবে আরো বেশি পরিমানে চাষ করা যায় সেই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাব।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা