তাড়াইলে ছুরিকাঘাতে বিএনপি সভাপতিকে হত্যা

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় আবুল হাসান রতনকে (৬৫) নামে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।

রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বানাইল বাজারে চায়ের দোকানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রতন ওই ইউনিয়নের বানাইল গ্রামের মরহুম নুরুল হকের ছেলে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বানাইল বাজারে চায়ের দোকানে রতনের সাথে গিয়াস উদ্দিনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রতন বাড়ি চলে গেলে গিয়াস উদ্দিনের ইশারায় তার ভাই, ভাতিজা ও নাতীরা একত্রিত হয়ে রতনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময় রতনসহ আহত চারজনকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রতনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় একই গ্রামের শিবলী আহমেদের ছেলে খালিদ হাসান রাতুল (২২), গাজিউর রহমানের ছেলে রাসেল (২৭) ও হৃদয় (১৮) গুরুতর আহত তিনজনকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত তিনজনের শরীরেই দেশীয় অস্ত্রের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই রতন মারা যান। পরিকল্পিতভাবেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। পূর্বশত্রুতার জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী নিহত আবুল হাসান রতনের মামাতো বোন অজিফা খানম জানান, আবুল হাসান রতনের সহিত প্রতিবেশী চাচা গিয়াস উদ্দিনের সাথে বিগত তিন থেকে চার বছর পূর্ব আগে এলাকায় জমি নিয়ে দ্বন্দ ছিল। গিয়াস উদ্দিন একই ইউনিয়ন বিএনপির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক।

একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১৫ জানুয়ারি উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষ্যে শনিবার রাতে বানাইল বাজারে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির এক পথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গিয়াস উদ্দিন। সমাবেশে নিয়মবহির্ভূত সভাপতিত্ব করায় গিয়াস উদ্দিনের সাথে রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি আবুল হাসান রতনের কথা কাটাকাটি হয়। সভাপতিত্ব নিয়ে দু’গ্রপের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটে। এ ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন দলের নেতাকর্মীরা।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাব্বির রহমান জানান, এখনই কিছু বলার সুযোগ নেই। কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা তদন্তের পর বলা যাবে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঘটনার পর পরই কিশোরগঞ্জ জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (করিমগঞ্জ সার্কেল) মো: এনামুল হক ও জেলা বিএনপি নেতা ভিপি সাইফুল ইসলাম সুমন তাড়াইল এসেছেন।

এ ঘটনায় এলাকার বিএনপি নেতা-কর্মীরা রতনের খুনির ফাঁসির দাবিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল করেছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী সারোয়ার হোসেন লিটনের সমর্থকরা বিএনপি নেতা সামীর হোসেন সাকী, শরীফ আহম্মেদ আলেক এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আখলাকুল ইসলাম অংকুর ও মো: সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ করে। এতে জেলা বিএনপি নেতা ভিপি সাইফুল ইসলাম সুমনসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

অপরদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ছাইদুজ্জামান মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শরিফুল মাহমুদ শোয়েবের নেতৃত্বেও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।