১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কিস্তি দিতে না পারায় ২ শিশুসহ মা গ্রেফতার

কিস্তি দিতে না পারায় ২ শিশুসহ মা গ্রেফতার - নয়া দিগন্ত

ঢাকার আশুলিয়ায় স্বামী এনজির কিস্তির টাকা পরিশোধ না করায় দুই শিশুসহ হানিয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, আদালতে দ্রুত জামিনের জন্যই তাকে বাচ্চাসহ গ্রেফতার করা হয়।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আশুলিয়া থানা থেকে তাকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আশুলিয়ার বাইদগাঁও তার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতার হানিয়া আক্তার ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের বাইদগাঁও এলাকার মনির হোসেনের স্ত্রী।

জানা গেছে, বছর খানেক আগে দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের সাভার শাখা থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন মনির হোসেন। এরই মধ্যেই ঋণের দু’লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধও করেছেন। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় সুদসহ এক লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হন তিনি। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দু’টি মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলায় ঋণ গ্রহীতা মনির হোসেনের স্ত্রী হানিয়া আক্তারকেও আসামি করা হয়। পুলিশ মনিরকে না পেয়ে তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেন। এ সময় তার স্ত্রীর সাথে তাদের দুই সন্তান আড়াই বছরের রায়হান ও ১৪ মাস বয়সের মাশরাফকে থানায় নিয়ে আসে।

মায়ের সাথে ছোট দু’শিশুকে থানায় নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে নিন্দা জানিয়েছে অনেকে। তবে পুলিশ বলছেন, তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতার মনিরের স্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না, কেন তারা আমাকে গ্রেফতার করেছে। শুধু শুনেছি, আমার স্বামী নাকি কিস্তি দিতে পারেনি। তাই তারা আমার নামে মামলা দিয়েছে। অথচ আমি কোনো এনজিও থেকে টাকাই তুলিনি। তারা স্বামীকে কিছু না বলে আমাকে ধরে এনেছেন।’

ঋণ গ্রহিতা এবং গ্রেফতার ওই নারীর স্বামী মনির হোসেন বলেন, ‘ঋণ নিয়েছি আমি, আমাকে গ্রেফতার না করে, তারা আমার স্ত্রী-সন্তানকে থানায় নিয়ে গেছে। ছোট্ট ব্যবসা করতাম, লোকসানের মুখে পড়ায় কিস্তি দিতে কিছুটা সময় নিচ্ছি।’

গ্রেফতার করা অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া আশুলিয়া থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, হানিয়া বেগমের নামে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে, তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মায়ের সাথে দুই শিশুসহ নিয়ে আসার কারণ সম্পর্কে পুলিশের এই এসআই বলেন, ‘ছোট ছোট বাচ্চা দু’টিকে মায়ের সাথে নিয়ে এসেছি যেন সে দ্রুত জামিন পান। এটা তো অন্যায় কিছু হয়নি। তাকে এনে হাজতেও রাখা হয়নি। মুন্সির রুমে বিছানা করে রাখা হয়েছিল। কারণ বাচ্চারা তো আর অপরাধ করেনি। এছাড়া তাকে প্রিজন ভ্যানেও পাঠানো হয়নি। একটা সিএনজি (অটোরিকশা) ভাড়া করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড সাভার শাখায় গিয়ে ব্যাংকটির সেকেন্ড অফিসার তাপস সরকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ২০২৩ সালের জানুয়ারি ৩১ তারিখে ১০ মাস মেয়াদি তিন লাখ টাকা মাইক্রোক্রেডিট লোন নেন মনির হোসেন। ওই লোনের জামিনদার ছিলেন তার স্ত্রী হানিয়া আক্তার। প্রতিদিন ১ হাজার ৮০০ টাকা কিস্তিতে তাকে লোন দেয়া হয়। তার কাছে এখনো এক লাখ ৮৪ হাজার ৫৫০ টাকা পাওনা রয়েছে। এই টাকা দীর্ঘ দিনেও পরিশোধ না করায় হেড অফিস থেকে দু’টি মামলা করা হয়। যার একটি মামলায় ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়।

লোন নিয়েছে তার স্বামী তাহলে কেন স্ত্রীর নামে মামলা দেয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তার স্ত্রী লোনের জামিনদার ছিল তাই তার নামেও মামলা হয়েছে।

দু’টি শিশু বাচ্চাসহ তাকে রাতের বেলায় ধরে এনে থানায় রাখা হলো মানবিক দৃষ্টিতে এটা কিভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা পুলিশের ব্যাপার, এ ব্যাপারে আমি কোনো কমেন্টস করতে পারবো না।’


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশের চারপাশে বাঁধ তৈরি, ভারতের আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন ন্যাটো পেলো ইউক্রেনে সামরিক সহায়তার দায়িত্ব খলিল জিবরানের দেশের দুঃখগাথা মিয়ানমারে ৯৬০ একর আফিম ক্ষেত ধ্বংস মৃত্যুহীন প্রাণ : শহীদ ইয়াহিয়া সিনওয়ার পিআর সিস্টেমের মাধ্যমে জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই : চরমোনাই পীর হাসপাতালের রোগীদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরাইলি স্নাইপাররা নিজাম হাজারীর ৮২ ব্যাংক হিসাবে ৫৪৮ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ভানুয়াতুতে ভূমিকম্পে ১৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত একীভূত হতে প্রাথমিক আলোচনায় হোন্ডা ও নিশান ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সিরীয়দের নেতৃত্বে’ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

সকল