১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
ব্যবস্থা নিতে স্মারকলিপি প্রদান ডিসি-এসপিকে

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতকে কাঠাল গাছে ঝুলিয়ে মেরে ফেলার হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে ঢাকার মিরপুরে পুলিশের গুলিতে আহত ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের কল্যাণপুটি গ্রামের তরিকুল ইসলাম সুজন (৩৫) নামে এক যুবককে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সুজন ও তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হয়ে এ অভিযোগ দেন।

তরিকুল ইসলাম সুজন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার বাবার নাম আবু জাফর মোল্যা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরের আলোক হাসপাতালের সামনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর তাকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর বর্তমানে সাভারের সিআরপিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুজনের উরুর স্থানে এখনো গুলি রয়ে গেছে। চিকিৎসকরা তার গুলি বের করতে পারেনি এখনো।

সিআরপিতে চিকিৎসারত অবস্থায় গতকাল শনিবার দু’দিনের জন্য ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পর রোববার সকালে তিনি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যেয়ে এ লিখিত অভিযোগ দেন।

সুজন তার বলেন, গত ১৭ অক্টোবর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম তার বাড়িতে যান। এ সময় শামা ওবায়েদ সুজনের বাড়ির উঠানে একটি মিটিং করেন। ওই মিটিংয়ের একটি ভিডিও ফুটেজ তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন।

সুজন অভিযোগ করেন, ফেসবুকে ওই ভিডিও পোস্ট করার কিছুক্ষণ পরে পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু তাকে মোবাইলে ফোন করে। লাবলু সুজনকে বলে, ‘তুই বড় নেতা হয়ে গেছিস। তোর কতো বড় সাহস, তুই আমার নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর এলাকায় শামা ওবায়েদকে এনে মিটিং করছিস। যারা নগরকান্দা-সালথা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে কাঠাল গাছের সাথে ঝুলিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলব।’

গত ১২ ডিসেম্বর সুজন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে একটি লাইভ ভিডিও পোস্ট করে।

ওই লাইভের পর ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার নগরকান্দার বিনোকদিয়া বাজারে সুজনের বোনজামাই ফয়েজ শেখের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অফিসে যেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলু তার বোন জামাইকে হুমকি-ধমকি দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান লাবলু ফেসবুক থেকে সুজনকে ওই ভিডিও ডিলিট করার নির্দেশ দিয়ে তার বোনজামাই ফয়েজ শেখকেও একই হুমকি দিয়ে বলেন, ভিডিও ডিলিট না করলে সুজনকে এলাকায় প্রবেশ করতে দেব না। সুজনকে কাঠাল গাছের সাথে ঝুলিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলব।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কামরুল ইসলাম মোল্যা অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়টি জানতে গট্টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাবলুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে বক্তব্য জানাও সম্ভব হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement