১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রঙ তুলির আচড়ে প্রস্তুত হচ্ছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে রঙ তুলির আচড় আর সৌন্দর্য্য বর্ধণের কর্মযজ্ঞে প্রস্তুত হচ্ছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এদিন মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও লাখো মানুষ বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসবেন।

বুধবার সরেজমিনে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের ভেতরে কেউ রঙের কাজ করছেন, কেউ করছেন ইটের কাজ, আবার কেউ ঝাড়ু দিচ্ছেন, কেউবা আবার ইলেকট্রিকের কাজ করছেন। আবার অনেকে করছেন পানি দিয়ে পুরো সৌধের ভেতর ধোয়া মুছার কাজ। আবার অনেকে করছেন ফুলসহ গাছের পরিচর্যা। হাতে লেখার কাজও করছেন একজন। সিসি ক্যামেরার কাজ করছেন অনেকেই।

আল মামুন নামের এখানে কাজ করতে আসা একজন জানান, ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে এক থেকে দেড় মাস আগে থেকেই এখানে সৌন্দর্য্য বর্ধণের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি ১০ দিন ধরে এখানে কাজ করছেন। তিনি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। দিনে ছয় শ’ টাকা হাজিরায় তিনি কাজ করছেন। এখানে কাজ করতে তার অনেক ভালো লাগে। বাইরে কাজ করলে দেখা গেছে একেক দিনে একেকজনের সাথে কাজ করতে হয়। কিন্তু এখানে একটানা ১০ দিন ধরে কাজ করছেন, সবার সাথে ভালো সম্পর্কও হয়েছে। ভালোই লাগে। এছাড়া প্রতিদিনের পারিশ্রমিক প্রতিদিন পরিশোধ করে দেয়। এখানে তিনি বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেন।

ফুল গাছের পরিচর্যা ও গাছ লাগাচ্ছেন আব্দুল মতিন নামের একজন। তিনি জানান, মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন স্থানে শোভা বাড়ানোর জন্য ফুলের গাছসহ নানা প্রজাতির গাছ রোপণ করা হচ্ছে। এখানে কাজ করতে তার ভালোই লাগে। কারণ বিজয় দিবসের দিনে এখানে লাখ লাখ মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন। আর সেখানেই তিনি কাজ করছেন। এতে তার অন্যরকম এক অনূভুতি অনুভব করে বলেও জানান তিনি।

রিকশায় ফুলের চারা সৌধ এলাকার ভেতর এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যান নাঈম নামের একজন। তিনি জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে নতুন নতুন ফুলসহ নানা প্রজাতির চারা রোপন করা হচ্ছে। এতে সৌধের সৌন্দর্য্য আরো বাড়বে।

অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে নাঈম বলেন, এখানে কাজ করতে আলাদা একটা অনুভূতি কাজ করে তার। খুব ভালো লাগে। যখন লাখ লাখ মানুষ এখানে আসবেন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে তখনকার কথা ভেবেই অনেক ভালো লাগে তার।

জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকার হাতে লেখার সম্পূর্ণ কাজ করে থাকেন জিএম আনোয়ারুল ইসলাম। কথা হয় তার সাথে।

তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, ১৯৮১ সাল থেকে তিনি নিয়মিত স্মৃতিসৌধে হাতে লেখার সমস্ত কাজ করে থাকেন। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ-সহ সমস্ত দিবসগুলোতে স্মৃতিসৌধে তিনি নিয়মিত হাতে লেখার কাজ করে থাকেন। এবার তিনি ডিসেম্বরের এক তারিখ থেকেই লেখালেখির কাজ শুরু করেছেন। পরিবারের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও মনের ভালো লাগা থেকে তিনি এখানে লেখালেখির কাজ করছেন দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ ও সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান নয়া দিগন্তকে জানান, আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টামন্ডলী ও বিদেশী কূটনীতিকসহ লাখ লাখ জনতা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেই লক্ষ্যে গণপূর্ত অধিদফতরের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্সকে ধুয়ে-মুছে পরিপাটি করা, ফুল দিয়ে সাজানো, রঙ তুলির কাজ, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস ধরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ সৌন্দর্য্য বর্ধণের কাজ করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement