আশুলিয়ায় টানা ৩২ ঘণ্টায়ও মহাসড়ক ছাড়েনি শ্রমিকরা
- তুহিন আহামেদ, আশুলিয়া (ঢাকা)
- ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৪৩
আশুলিয়ায় টানা ৩২ ঘণ্টা পার হলেও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা। তারা ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ডিইপিজেড) পুরাতন জোনের মূল ফটকে অবস্থান নিয়েছেন।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আন্দোলনরত শ্রমিকদের কয়েকজন প্রতিনিধির সাথে বৈঠক করেছেন বেপজা কর্মকর্তারা।
পরে বৈঠক শেষে শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত না মেনে কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।
বিক্ষোভকারী একাধিক শ্রমিক জানান, চার বছর আগে শ্রমিকদের বেতন বকেয়া রেখে বন্ধ হয়ে যায় লেনী ফ্যাশন ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানা। এরপর কারখানা দু'টির একটি বিক্রি করে দেন বেপজা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বিক্রির টাকা ব্যাংকে জমা থাকলেও শ্রমিকদের বকেয়া এখনো পরিশোধ করা হয়নি।
তারা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে ডিইপিজেডের সামনে জরো হন কারখানা শ্রমিকরা। পরে তারা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে রাত ৯টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিয়ে ডিইপিজেডের পুরাতন অংশের মূল ফটকের সামনে সারারাত অবস্থান করে তারা।
এদিকে, বুধবার সকালে আন্দোলনকারীদের সাথে আরো শ্রমিক যোগ দেন। পরে ফটকের সামনে ও মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। সকালে ডিইপিজেডের পুরাতন অংশের কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে আসেন। এ সময় তাদেরকে বাধা দেয়া হলে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা ফিরে যান।
শ্রমিক মেরিনা আক্তার বলেন, আমরা গতকাল থেকে কষ্ট করছি তারপরও কোনো সমাধান হয়নি। আমাদের একটাই দাবি আমরা এখান থেকে টাকা নিয়ে যাবো। আমাদের বলা হয়েছিল, ৩০ নভেম্বর টাকা দিবে। যদি টাকা দিয়ে দিত তাহলে আর এরকম ঝামেলা হতো না। যেহেতু মালিকপক্ষ ঝামেলা করছে, তাই আমাদেরও আর উপায় নেই। আমরা আমাদের টাকা নিয়ে এখান থেকে ঘরে ফিরবো।
শ্রমিক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ৪ বছর আগে পাওনা না দিয়ে হটাৎ করে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আমরা বকেয়া বেতনের জন্য আন্দোলন করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত টাকা দেয়া হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা বেপজা কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করেন। পরে ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাহিরে এসে মাইকে ঘোষণা করে। এ সময় বলা হয়, আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে শ্রমিকদের ফরম বিতরণ করা হবে এবং অল্প সময়ের মধ্যে পাওনা পরিশোধ করা হবে। তাই শ্রমিকদের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে আন্দোলন বন্ধের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু শ্রমিকরা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রাখে এবং পাওনা না নিয়ে ঘরে ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সমস্যা সমাধানে ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করছেন। আমরাও শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা করছি। সড়ক অবরোধ করায় যানবাহনগুলো বিকল্প সড়কে চলছে।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) আনোয়ার পারভেজ বলেন, বেপজার পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা চলছে। তাদেরকে আমরা চাইলেও এই মুহূর্তেই কেন দু’টি কারখানার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না তা বুঝানোর চেষ্টা করছি। কারখানা বিক্রির পদ্ধতি, আইনিপ্রক্রিয়া এবং বকেয়া পরিশোধের পদ্ধতির বিষয়টি তাদের জানানো হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা