নারায়ণগঞ্জে নতুন করে আলোচনায় জামান-সেলিম জুটি
- নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
- ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:৫৩
নারায়ণগঞ্জে আবারো আলোচনায় এসেছে জামান-সেলিম জুটি। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের একটি ছবি প্রকাশ হওয়ার পর নতুন করে শুরু হয়েছে পুরোনো আলোচনা-সমালোচনা।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার স্থানীয়দের অভিযোগ, বিগত দিনে বহু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ব্যাপক সমালোচিত জামান-সেলিম একসময় আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারা আবারো প্রকাশ্যে এসেছেন।
ভুক্তভোগীরা বলছে, জামান-সেলিম ক্ষমতার প্রভাবে সিদ্ধিরগঞ্জ ফতুল্লা এলাকায় রাজত্ব কায়েম করে। তাদের ভয়ে শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষই নয়, ভয়ে তটস্থ থাকত বিএনপির নেতাকর্মীরাও। ১/১১-এর সময় জামান-সেলিম গোপনে দেশ ত্যাগ করে চলে যান সাউথ আফ্রিকাতে। দীর্ঘ সময় তারা আত্মগোপনে থাকেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর প্রকাশ্যে আসেন জামান-সেলিম। সম্প্রতি সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের সাথে জামান-সেলিমের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে নুতন করে সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে বিএনপির নির্যাতিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা জামান-সেলিমের প্রত্যাবর্তনের খবরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেছেন।
সূত্রে জানা গেছে, ১/১১-এর আগে ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জের আতঙ্ক ছিল জামান-সেলিম। তাদের নদী দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাটসহ বিভিন্ন অপকর্মে অতিষ্ঠ ছিল সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে তখনকার বিএনপির তৃনমূলের নেতাকর্মীরা বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছিল জামান-সেলিম জুটির কাছে। একসময় জনরোষের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যান তারা। চার দলীয় ঐক্যজোট সরকারের ক্ষমতার পালাবদলের পর সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। ওই সময় জামান-সেলিম ও আক্তারের নানা অপরাধমূলক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
পরে ১৭ বছর ‘নির্মম’ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিএনপির সকল নেতাকর্মী ও সমর্থক। দীর্ঘ ১৫ বছর সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিনের সাথে তার নিজস্ব বলয়ের বাইরের নেতাকর্মীদের কোনো প্রকার যোগাযোগ ছিল না।
গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গিয়াস উদ্দিনের সাথে জামান, সেলিম ও আক্তারের একাধিক দেখা যাচ্ছে। তা দেখে নেতাকর্মীসহ ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জবাসীদের মনে জন্ম নিয়েছে নানা প্রশ্নের।
ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জানিয়েছে, জামান-সেলিমের হঠাৎ আর্বিভাবে বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্ধ। জামান, সেলিম ও আক্তারের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে এমপি থাকাকালীন গিয়াস উদ্দিন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
আওয়ামী লীগ সরকারের দেয়া ৫০টি মামলার আসামি এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিগত ১৭ বছরে আমি ৫০টির বেশি মামলার আসামি হয়েছি। আর আমি সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছি। কিন্তু এখন গিয়াস উদ্দিন আমাদেরকে দূরে সরিয়ে দিয়ে সেই পূরনো তিনজনকে নিয়ে এসেছেন। তাদেরকে নিয়ে ব্যবসা-বানিজ্যের ছক কষছেন। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, এত দিন কোথায় ছিলেন তারা? আন্দোলন সংগ্রামে তাদের ভূমিকা কী?’