২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রী নিহত : চার কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

আফসানা করিম রাচি - নয়া দিগন্ত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত-অটোরিকশার ধাক্কায় এক ছাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তা-কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ছাত্রী আফসানা করিম রাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ ব্যাচের ছাত্রী বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে মোখিকভাবে ব্যাটারিচালিত-অটোরিকশা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. আজিজুর রহমান জানান।

নয়া দিগন্তকে তিনি আরো জানান, রাতেই নিহত শিক্ষার্থীর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অটোরিকশাচালককে এখনো শনাক্ত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে আফসানা করিম রাচি অটোরিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেয়া হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মার্কেটিং বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী রিচি বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবার নাম মো: রেজাউল করিম, মা কিছমত আরা। রাজধানীর গ্রিন রোডের গ্রিন স্কয়ারে তাদের বাড়ি। রিচির গ্রামের বাড়ি শেরপুর জেলায় বলে জানা গেছে।

আফসানা করিম রাচি নিহতের পর বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তা-কর্মচারী এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান বাবুল, নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাসেল মিয়া, সহকারী সুপারভাইজার আব্দুস সালাম ও ডিউটি গার্ড মনসুর রহমান প্রামাণিককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিসের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. আহমেদ সুমন নয়া দিগন্তকে জানান, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত ক্লাশ-পরীক্ষা ও পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত হওয়ায় শোক পালন করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি
আফসানার নিহত হওয়ার পর ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সড়ক উন্নয়ন, সার্বিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিলটি বের হয়ে কয়েকটি সড়ক ঘুরে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে সেখানে আরো বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, সদস্য ও শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই ‘হত্যাকাণ্ডের’ যথাযথ বিচার করতে হবে, পর্যাপ্ত সড়কবাতি, ফুটপাত ও গতিরোধক স্থাপন করতে হবে এবং যানবাহনে গতি পরিমাপক রাখতে হবে, নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, মেডিক্যাল সেন্টারের জরুরি সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে, নিবন্ধনহীন সব যানবাহন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং নিবন্ধন প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, সব রিকশাচালকের প্রশিক্ষণপূর্বক নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে, অদক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের প্রত্যাহার করতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement