গাজীপুরে নির্ধারিত সময়ের আগেই বেতন পেল টিএনজেড কারখানার শ্রমিকরা

গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের পাঁচটি কারখানার তিন হাজার ৬২০ জন শ্রমিক এবং ১২০ জন স্টাফ নির্ধারিত সময়ের আগেই বকেয়া এক মাসের বকেয়া বেতন হাতে পেয়েছেন।

কারখানার মালিক, শ্রমিক বিজিএমইএ এবং সরকারি যৌথ সিদ্ধান্ত নির্ধারিত সময়ের আগেই বাস্তবায়ন করেছে টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শ্রমিকদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে এই বেতন ঢুকতে থাকে। এর ফলে শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে।

টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক জানান, প্রথম দফায় শ্রমিকদের বকেয়া আট কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

বেতন পেয়ে কারখানার শ্রমিক শেফালী আক্তার বলেন, আগামী রোববারের মধ্যে বেতন দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিকাশ অ্যাকাউন্টে বেতন পেয়ে গেছি। আমাদের মালিকপক্ষ কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। আমরা সবাই খুশি। এখন আমরা কাজে যোগ দেয়ার অপেক্ষায় আছি।

এদিকে, টিএনজেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হেদায়াতুল হক জানিয়েছেন, শনিবার থেকে কারখানাগুলো পুনরায় চালু হবে। তিনি আশা করছেন, শ্রমিকরা কাজে ফিরবেন এবং উৎপাদন শুরু করে মালিকপক্ষের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সহায়তা করবেন।

টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, বেসিক ক্লথিং লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডে মোট প্রায় তিন হাজার ৬০০ শ্রমিকের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন বকেয়া ছিল। এছাড়া এক্সপো কার্টুন ও এমএনএস ইয়ার্ন ডায়িং কারখানায় স্টাফদের বেতন ও সার্ভিস বেনিফিট বকেয়া রয়েছে।

গত ৯ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে উভয় মহাসড়কে ভয়াবহ যানজট দেখা দেয়। তিন দিনে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ে এবং পণ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়।

টানা তিনদিনের বিক্ষোভের পর শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান ঘোষণা দেন যে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে সরকার উদ্যোগ নেবে।

গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ জন শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয় যে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে।

তিনি বলেন, সরকারের সহায়তায় নির্ধারিত সময়ের আগেই গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বেতন বাবদ আট কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি জানান, শ্রমিকরা কোনো কাজ না করেই এই অর্থ পেয়েছে। আগামী কিস্তির অর্থও তারা কাজ ছাড়াই পাবে।

শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতায় শ্রমিকরা তাদের পাওনা টাকাগুলো সময়মতো পাবে। আমরা আশা করি, শ্রমিকরাও এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারখানার উন্নয়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে।