বাতাসে কদবেলের ঘ্রাণ!
- শওকত আলী রতন, দোহার (ঢাকা)
- ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩২
বছরের এই সময়টাতে গুলিস্থান-নবাবগঞ্জ সড়কের মাঝিরকান্দা থেকে কলাকোপা হাড়ভাঙা আশপাশের এলাকায় বাতাসে ছড়িয়ে পড়া পাকা বেলের সুঘ্রাণ নাকে ভেসে আসে। এ সড়কের দুই কিলোমিটার বিস্তৃত রাস্তাজুড়ে কদবেল রোদে শুকানোর দৃশ্য চোখে পড়বে।
এ পথে যাওয়ার সময় বেলের ঘ্রাণে আটকে পথচারীরা, তাদের মোহিত করবে বেলের ঘ্রাণ। বেলের ঘ্রাণে যানবাহন থামিয়ে অনেকেই বেল কিনতে দেখা যায়। বেল দিয়ে নানা স্বাদের আচার ও বেলের ভর্তা এ অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মুখরোচক খাবার।
জানা যায়, মাঝিরকান্দা, সাদাপুর ও হযরতপুর এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে বেলের ব্যবসার সাথে জড়িত। মার্চ-এপ্রিলের দিকে বেল গাছে গুঁটি আসার পর পরই বেল গাছ কিনতে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। বেল পাকার উপযোগী হলে গাছ থেকে পেড়ে বস্তাবন্দি হয়ে চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে।
গাছ থেকে কাঁচা বেল সংগ্রহ করে কয়েক দিন রোদে শুকালে বেল সহজেই পেকে যায়। এতে দামও ভালো পাওয়া যায় ও স্বাদে অনন্য। যার কারণে বেল ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বাজারগুলোতে চাহিদা থাকায় রোদে শুকিয়ে পাকানোর পর নিয়ে বাজারে নিয়ে যায়।
রোদে বেল পাকানোর জন্য সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে বেল শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকে তারা। রাস্তার পাশে চটে বেল ভালোভাবে বিছিয়ে রাখতে হয়। কিছুক্ষণ পর পর বেল নেড়ে চেড়ে দিতে হয়। এভাকে তিন থেকে চার দিন রোদে দিলে বেল পেকে যায়।
পাকা বেল কেজি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। তারা পাকা বেলের ভর্তা কিংবা আচার তৈরি করে সারাবছর সংরক্ষণ করে থাকে।
উপজেলার হয়রতপুর এলাকার ব্যবসায়ী হামেস মিয়া বলেন, ‘প্রথম দিকে বেল গাছ থেকে সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে ঢাকায় পাঠানো হয়। শেষের দিকে বেল ঢাকায় না পাঠিয়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করে থাকি।’
এ সময়ে ভালো দাম পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
আরেক ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক জানান, ‘এ বছর বেলের দাম ভালো হওয়ায় আমরা লাভবান হয়েছি। অন্য ফলে কেমিক্যাল মেশানো হলেও এখনো বিষমুক্ত মৌসুমী ফল বেল।’
টক-মিষ্টি স্বাদের ফলটিতে ডায়ারেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ভিটামিন সি-সহ অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।