১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১, ১১ রজব ১৪৪৬
`

হাত ঘুরেই ৩৫ টাকার বেগুন ৭০ টাকা!

- ছবি : নয়া দিগন্ত

কৃষাণী পারুল বেগম। তিনি প্রায় সকল ধরনের সবজি চাষ করেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বেগুন চাষ। এবার ফসলের মাঠে তিনি ১৭০ শতাংশ জমিতে উন্নত জাতের বেগুন চাষ করছেন। বেশি লাভের আশায় নিয়মিত ফসলের মাঠ পরিচর্যাও করছেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।

পারুল বেগমের মতো নজরুল ইসলাম নামে আরেক কৃষক প্রায় ৯০ শতাংশ জমিতে তিনিও বেগুন চাষ করেছেন। তার আশা ছিল, ন্যায্য দাম পাওয়া।

বর্তমান সময়ে সারাদেশে হাট বাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া হলেও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেদের চিত্র ভিন্ন। তারা সে অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না। কৃষকেরা প্রকারভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করলেও ভোক্তা পর্যায়ে কেজিতে গুনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এর মধ্যে পাইকারী ব্যবসায়ী, আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মিলে দাম বাড়াচ্ছে দ্বিগুন।

মানিকগঞ্জ জেলার মধ্যে সাটুরিয়া উপজেলা সবজি উৎপাদনে অন্যতম। সরেজমিনে শনিবার দুপুরে উপজেলার তিল্লি ইউনিয়নের চরতিল্লি এলাকার বিভিন্ন ফসলের মাঠে দেখা গেছে এমন চিত্র।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সাতটি ইউনিয়নে সবজি উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার হেক্টর। এর মধ্যে শুধু তিল্লি ইউনিয়নেই এবার ৪০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করা হয়েছে। ওই এলাকার কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি বেগুন চাষ করে থাকে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার উৎপাদিত সবজি প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা স্থানীয় পর্যায়ের পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছে এসব সবজি বিক্রি করে থাকে। আর পাইকারী ব্যবসায়ীরা আড়তদারদের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। খুচরা ব্যবসায়ীরা আবার ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করে। এতে কয়েকটি হাত ঘুরার ফলে সবজির দাম বৃদ্ধি পায়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সবজিগুলো ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় কৃষক মো: আলাল মিয়া জানান, ‘বাজারে সবজির দাম অনেক বেশি। আমরা তো সবজির দাম বেশি পাই না। কয়েকটি হাত ঘুরেই বাজারে সবজির দাম দ্বিগুন হয়ে যাচ্ছে।’

স্থানীয় আড়ত মালিক সুমন বান্দু বলেন, ‘এ বাজারে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার মণ বেগুন কেনাবেচা হয়। পরিবহন ও অন্যান্য খরচ বাদে আমরা সীমিত মুনাফায় বিক্রি করে থাকি।’

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত সরকার নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘সাটুরিয়ায় তিল্লি ইউনিয়নে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়। তার মধ্যে এখানে সবচেয়ে বেশি বেগুন উৎপাদন করা হয়।’

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সাটুরিয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বেগুন উৎপাদন করা হয় তিল্লি ইউনিয়নে। এ বিষয়ে কৃষি অফিস কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে।’


আরো সংবাদ



premium cement