নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে হামলাকারীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত জরুরি যৌথসভায় এ আল্টিমেটাম দেন তারা।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দীপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের বহু সাংবাদিক জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করছেন। জেলার ঐতিহ্যবাহী এ প্রেসক্লাবের ৫৮ বছরের ইতিহাসে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

একই সাথে প্রশাসনের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘প্রেসক্লাবে হামলার আশঙ্কা করে হামলা হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে পুলিশ সুপারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানালেও তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরে হামলাকারীদের হামলায় সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ আহত হলে ক্লাবের অন্যান্য সদস্য এবং ক্লাব স্টাফরা হামলার নেতৃত্বদানকারীকে আটক করে পুলিশে দেয়। কিন্তু এ হামলার ঘটনায় উল্টো হামলাকারীদের পক্ষে মিথ্যা মামলা গ্রহণ করায় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতার ও হামলাকারীদের পক্ষ থেকে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেন সাংবাদিক নেতারা। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তারা।’

তারা বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে গঠিত এ নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব বিগত ৫৮ বছর যাবৎ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কোনো সরকারের আমলে কোনো রাজনৈতিক সংগঠন বা ব্যক্তি প্রেসক্লাবের কার্যক্রমে কখননোই হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেনি। এমনকি গত ১৫ বছরে আওয়ামী শাসনামলেও তৎকালীন এমপি-মন্ত্রী-মেয়র কিংবা নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের দুঃসাহস দেখায়নি। তবে গত ৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর একটি রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতাদের ইন্ধনে ওই দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়েছে। যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও গর্হিত কাজ। ফলে এ হামলার পেছনের ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।’

জরুরি সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আইউব, হাবিবুর রহমান বাদল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম, ড. রুমন রেজা, খন্দকার শাহ্ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা করিম, নাফিজ আশরাফ, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য ফজলুল বারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের (এনইউজে)  সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, প্রেসক্লাব কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, কার্যকরী সদস্য আফজাল হোসেন পন্টি, নাহিদ আজাদ, এম আর কামাল, রফিকুল ইসলাম রফিক, শফিকুল ইসলাম সোহেল, প্রণব কৃষ্ণ রায়, শওকত আলী সৈকত, হাসান উল রাকিব, শফিকুল আলম সুজন প্রমুখ।