২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১, ২০ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

হাসিনা পালানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়েছে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ

হাসিনা পালানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়েছে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ - ছবি : নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে অত্যাধুনিক পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

৫ আগস্ট সরকার পতনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চাষাঢ়ায় অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালাতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ৫ আগস্ট সকাল থেকেই ছাত্র-জনতার লং মার্চ ঠেকাতে চাষাঢ়ায় অবস্থান নেয়।

ওই দিন সকাল ১০টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছাত্র-জনতা রওয়ানা হলে চাষাঢ়ায় সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সাথে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে ছাত্রলীগ নেতারা। এছাড়া জালকুড়ি, সাইনবোর্ড, শিমরাইলসহ শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এদিকে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় হামলা, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত থাকায় ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

আন্দোলনের শুরু থেকেই নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার্থীদের হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সম্রাট ও সাধারণ সম্পাদক মো: রাসেল প্রধান। মেহেদী ও রাসেলের নেতৃত্বে চাষাঢ়া কেন্দ্রীক আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর ১৭ জুলাই থেকে লাগাতার হামলা চালানো হয়।

এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু ও ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ কাউসারের নেতৃত্বেও ছাত্রদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

১৭ জুলাই নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর। রাত পর্যন্ত পুলিশ ও ছাত্রলীগের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতার সংঘর্ষ চলে। এতে পুরো শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

পরবর্তীতে ১৮ জুলাই জুমার নামাজের পর শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাব থেকে সশস্ত্র নেতাকর্মীদের নিয়ে আন্দোলন দমন করতে নামেন শামীম ওসমান। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভারী অস্ত্র নিয়ে শহরজুড়ে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে ডিআইটি এলাকা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গুলিবর্ষণ করে শামীম ওসমান। পরে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে ঢাকায় চলে যান শামীম ওসমান ও তার অনুসারীরা।

স্বাধীনতার পর নারায়ণগঞ্জে এমন ভয়াবহ চিত্র কেউ দেখেননি বলে জানান নগরবাসী। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গুলিবর্ষণের কারণে সেদিন কোনো সংবাদকর্মীও মাঠে নামতে পারেনি। পরবর্তীতে গোপনে ধারণ করা এর কিছু ভিডিও প্রচার হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এদিকে নারায়ণগঞ্জে ছাত্র হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।

নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হত্যা, টেন্ডারবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এছাড়া আন্দোলন দমনে অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসকল ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ছাত্রলীগের এসকল নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বর্তমানে এদের প্রায় সকলেই আত্মগোপনে আছেন বলে জানা গেছে।

বিগত ১৬ বছর ধরেই আওয়ামী লীগের শাসনামলে নারায়ণগঞ্জে অপ্রতিরোধ্য ছিল ছাত্রলীগ। নারায়ণগঞ্জে নানা রকমের অপকর্মে জড়িয়ে আওয়ামী লীগের শাসনামলের পুরো সময়জুড়েই আলোচনায় ছিল ছাত্রলীগ শহরের ফুটপাতে চাঁদাবাজি, গার্মেন্টসের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল ছাত্রলীগের নেতারা।

এছাড়া নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল করতে গিয়ে ধরা পড়েও সমালোচিত হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগের পদধারী নেতারা। তবে আওয়ামী লীগ সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের আশীর্বাদে পার পেয়ে যান ছাত্রলীগের নেতারা।


আরো সংবাদ



premium cement
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিয়ে সংকট তৈরির অপচেষ্টা চলছে : লেবার পার্টি কুমিল্লায় ছাত্রলীগ নেতাকে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘর থেকে আটক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৪২ জনকে হত্যার মামলা খারিজ বাগেরহাটে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ক্যান্সার টিকার ক্যাম্পেইন ফরিদপুরে যেভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হয়ে ওঠে ছাত্রলীগ কানাডার সাথে সেনাপ্রধানের বৈঠকে ভিসা সহজীকরণ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় গুরুত্ব সাকিবের বিকল্প নয়, নিজের নামেই পরিচিত হতে চান মিরাজ দানার প্রভাবে পাইকগাছায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে উপকূলীয় ১৪ জেলা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা জেলা ও মহানগরী জামায়াত আমিরদের নাম ঘোষণা যেভাবে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র নামকরণ

সকল