১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩০, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

উন্নত চিকিৎসার অভাবে বিছানায় কাতরাচ্ছেন মাওলানা আবু নাঈম

উন্নত চিকিৎসার অভাবে বিছানায় কাতরাচ্ছেন মাওলানা আবু নাঈম - ছবি : নয়া দিগন্ত

হাফেজ মাওলানা আবু নাঈম (২২) মেধাবী ও সাহসী একজন তরুণ। জুলাই-আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের শুরু থেকেই একেবারে সম্মুখভাগে ছিলেন। পুলিশের একটি গুলি তার পেট ভেদ করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

এরপরে ঢাকা মেডিক্যালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও আজো তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারেন না। কথা বলতে গিয়েও হাঁপিয়ে উঠেন তিনি।

মাওলানা আবু নাঈমের শিক্ষক ও পরিবার জানিয়েছেন, তাকে বাঁচাতে হলে দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করানো দরকার।

হাফেজ মাওলানা আবু নাঈম ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থানার সিঙ্গুরা গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে। রাজধানীর রামপুরা, সালামবাগ জামিয়া আনোয়ারুল উলূম মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের শিক্ষার্থী ও রামপুরা ছাত্র জমিয়তের পাঠাগার সম্পাদক তিনি।

এই প্রতিবেদকের কথা হয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের রামপুরা থানার সাংগঠনিক সম্পাদক ও সালামবাগ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি মামুনুর রশিদের সাথে।

তিনি জানান, ১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পরে আমাদের মাদরাসার দেড়শতাধিক শিক্ষার্থীসহ জমিয়তের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা রামপুরা রাজপথে ছিলাম। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে আমাদের মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের শিক্ষার্থী আবু নাঈম রামপুরা টিভিগেটের সামনে অত্যন্ত ভয়াবহভাবে গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নাঈমের যথাযথ চিকিৎসা করানো হয়নি।

শিক্ষক মুফতি মামুনুর রশিদ আরো জানান, নাঈম অত্যন্ত গরিব পরিবারের একমাত্র ছেলে। তার বাবা অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে দিন আনে দিন খায়। আমরা মাদরাসা থেকেও সহায়তা করেছি। কিন্তু নাঈমকে বাঁচাতে হলে উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমি খুব দ্রুত অন্তর্বর্তী সরকারকে বিষয়টি দেখার আহ্বান করছি।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) মোবাইলে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় মাওলানা আবু নাঈমের। তিনি জানান, কোনোকিছু পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে আন্দোলনের মাঠে নামেননি তিনি। শুধু এটুকু মনে রেখেছিলেন, যেকোনো মূল্যে ছাত্রজনতার অধিকার আদায় করতে হবে। মানুষের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে হবে। এরপরে ১৯ জুলাই রামপুরা টিভি গেটের সামনে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

মাওলানা আবু নাঈম জানান, আমরা যদিও ব্যক্তিগত কোনোকিছুর প্রত্যাশা নিয়ে মাঠে নামিনি। তবুও এ সরকারের উচিত ছিল আন্দোলনে আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।

নাঈম বলেন, আমারা বাবার বয়স ৭০ বছরের বেশি। তিনি অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে কোনো মতো পরিবারের খরচ চালান। যেদিন কাজ করতে পারেন না সেদিন আমাদের কারো পেটে ভাত জোটে না। তিনি আমার চিকিৎসার খরচ কীভাবে চালাবেন।

আবু নাঈম বলেন, আহত হওয়ার পরে অনেকেই এসেছেন। চিকিৎসা করাবেন বলে নাম-পরিচয় লিখে নিয়ে গেছেন। কিন্তু এরপরে আজ পর্যন্ত তাদের আর কোনো খোঁজখবর পাইনি।


আরো সংবাদ



premium cement