০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন রেলের নকশা জানুয়ারিতে

জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন রেলের নকশা জানুয়ারিতে - প্রতীকী ছবি

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) আর্থিক সহায়তায় ১৬২ দশমিক ০২৩ কিলোমিটার জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে বিশদ নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেছে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) প্রকল্প পরিচালক মো: গোলাম মোস্তফা বলেন, জয়দেবপুর ও ঈশ্বরদী সেকশনের মধ্যে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণের জন্য বিশদ নকশা ও দরপত্র সহায়তা এবং অন্য আনুষঙ্গিক কাজে ২০২৩ সালের মধ্যে পরামর্শক সেবার জন্য ঋণ হিসাবে ১৬২ কোটি টাকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাইকা।

২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে বিশদ নকশার কাজ শুরু হবে এবং কাজটি শেষ করতে কমপক্ষে ১২ মাস সময় লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর আমরা ২০২৬ সালে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করতে পারি। রেলওয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে সংযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।

মাঠপর্যায়ের কাজ শেষে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ ২০২৮-২০২৯ সালের মধ্যে অবকাঠামোগত কাজ শেষ হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন প্রকল্প পরিচালক। এর জন্য পরামর্শকগণ পুরো জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী লাইনের বিশদ নকশা করবেন।

মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০২৩ সালে ১৫ জানুয়ারি জাইকার কাছে প্রস্তাব পাঠায় এবং জাপানের উন্নয়ন সংস্থাটি ওই বছরের ৯ মার্চ প্রস্তাবটি অনুমোদন করে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সরকারে সাথে সরকারের উদ্যোগে ১৬২ দশমিক ০২৩ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণের কথা ছিল। পরে চীনা পক্ষ এই প্রকল্প থেকে সরে আসে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের সাথে আলোচনা সম্পন্ন করে এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ১১ হাজার ৫৮৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। কিন্তু ২০২১ সালের মার্চে চীন অর্থায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী রেল চলাচলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সরকার ১৬২ কিলোমিটার জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনকে ডুয়েল-গেজ ডাবল লাইনে পরিণত করতে ২০১৮ সালে নভেম্বরে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

বাসসের সাথে আলাপকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার শাহাদাত আলী বলেন, চীনের পক্ষ থেকে নেতিবাচক সাড়া পাওয়ার পর রেলপথ মন্ত্রণালয় প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাইকাকে প্রস্তাব দেয়।

তিনি বলেন, জাইকার সাথে আলোচনার পর বাংলাদেশ রেলওয়ে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে এবং লাইনের জন্য প্রকল্প সংক্রান্ত কাজ প্রস্তুত করেছে। এখন আমাদের জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডাবল লাইন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে।

২০২৩ সালের ৯ মার্চ আগ্রহের অভিব্যক্তি (ইওআই) আমন্ত্রণের জন্য একটি নোটিশ অনুসারে, পরামর্শদাতা নিম্নলিখিত কাজগুলো সম্পন্ন করবে : সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, তদন্ত ও জরিপ, প্রকৌশল পরিষেবা, বিডিং সহায়তা, সুরক্ষা সহায়তা এবং ইউটিলিটি স্থানান্তর, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং বিদেশে প্রশিক্ষণ/স্টাডি ট্যুরের আয়োজনের মতো অন্য সম্পর্কিত বিষয়াদি।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, বিদ্যমান লাইনের উত্তর পাশে নতুন ডাবল লাইন স্থাপন করা হবে এবং এজন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে ৫৬ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।

এছাড়া লাইনের কাঙ্ক্ষিত সুবিধা পেতে ১৬ হাাজর ৭৮০ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর ওপর এখন একটি ডেডিকেটেড ডুয়েল-গেজ, ডাবল লাইন রেলওয়ে সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে যা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে রাজধানীকে যুক্ত করবে।

৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার ডেডিকেটেড ডাবল লাইন রেল সেতুটি জাপানি ঋণে নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে এবং প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি চালুর বিষয়ে আশাবাদী।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement