২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

নেশার ট্যাবলেটের ভাগ না দেয়ায় টোকাই ছোটভাইকে হত্যা

পুলিশের সংবাদ সম্মেলন -

গাজীপুরে ভিক্ষা করে জমানো টাকা দিয়ে নেশার জন্য কেনা ঘুমের ট্যাবলেটের ভাগ না দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে কাঁচের বোতল ভেঙে ছোট ভাইকে হত্যা করে লাশ মহাসড়কের বিভাজকে ফেলে রাখে শারিরীক প্রতিবন্ধী সৎ ভাই। এ ঘটনায় প্রতিবন্ধী সৎ ভাইকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়দেবপুর থানায় সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটনের তথ্য নিশ্চিত করেন গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম।

নিহত আবু বকর (২৫) ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। 

গ্রেফতার হওয়া আব্দুল হালিম (৩৮), নিহতের বড় সৎভাই ও শারিরীক প্রতিবন্ধী (এক পা পঙ্গু)। 

এদের মধ্যে প্রতিবন্ধী হালিম এলাকায় ভিক্ষা করতো ও আবু বকর বোতল কুড়াতো (টোকাই)। তারা গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় মহাসড়কের ফুটওভার ব্রিজের ওপর রাতে ঘুমাতো। গত ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুরে আস তারা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, প্রথম স্বামী আরুল্লা’র মৃত্যুর পর হালিমের মা হাসিনা বেগম ময়মনসিংহের আব্দুল জলিলকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। হাসিনা দ্বিতীয় সংসারের সন্তান নিহত আবু বকর। গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে জয়দেবপুর থানার বাঘেরবাজার এলাকায় মণ্ডল গার্মেন্টসের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সড়ক বিভাজক থেকে আবু বকরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বোন রিনা বেগম থানায় মামলা দায়ের করেন। মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে জয়দেবপুর থানার পুলিশের কয়েকটি টিম তদন্ত কাজ শুরু করে এবং বাঘের বাজার এলাকায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করে। ওই ফুটেজের তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোরে বাঘেরবাজার এলাকা থেকে হালিমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া হালিম ছোটভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হালিম জানায়, 'গত ২৩ সেপ্টেম্বর তারা দুই ভাই ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর আসে। তার সৎ ভাই আবু বকর ভাঙ্গাড়ি কুড়িয়ে বিক্রি করতো। সে জুয়া ও নেশা আসক্ত ছিল। প্রায়শঃ সে হালিমের কাছ থেকে ভিক্ষা করে জমানো টাকা ছিনিয়ে নিত এবং মারধর করতো। ওইদিন রাত ৮টার দিকে হালিম বাঘের বাজার ওভারব্রিজের ওপরে ভিক্ষা করার সময় আবু বকর নেশাদ্রব্য কেনার জন্য তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে চলে যায়। দীর্ঘ সময়েও ফিরে না আসায় ভোররাতের দিকে হালিম তার সৎ ছোটভাই আবু বকরকে খুঁজতে বের হয়ে দেখে সে স্থানীয় মণ্ডল ইন্টিমেন্টস পোশাক কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডিভাইডারের ওপর গাম জাতীয় নেশা সেবন করছে। এ সময় ছোট ভাই আবু বকর প্রতিবন্ধী ভাই হালিমের কাছে নেশা করার জন্য আরো টাকা চায়। টাকা দিতে না চাইলে হালিমকে মারধর করে আবু বকর। এর একটু পরেই আবু বকর নেশার ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এ সময় হালিম পাশে থাকা ভাঙা কাঁচের বোতল দিয়ে আবু বকরের বুকে ও পাঁজরে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। পরে ছোটভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে ফুটওভার ব্রিজের ওপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছোটভাই আবু বকরের লাশ উদ্ধার করে।'

জয়দেবপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বলেন, মামলার তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে, দুই সৎভাই হালিম ও আবু বকর একই মায়ের সন্তান। তারা দু’জনই নেশা করতো। ভিক্ষা করে জমানো টাকা হালিমের কাছ থেকে আবু বকর প্রায়শ ছিনিয়ে নিত এবং মারধর করতো। ঘটনার রাতে হালিম নেশা জাতীয় ঘুমের ২০টি ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে রাগে ক্ষোভে পাশে থাকা কাঁচের ধারালো ভাঙা বোতল দিয়ে আঘাত করে তার ভাই আবু বকরকে হত্যা করে। 

সংবাদ সম্মেলনে থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হালিম ও পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলামসহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ পুলিশ অফিসারসহ আহত ৪ যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে দ্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে : মির্জা ফখরুল এলো শরৎ জেনারেল এরশাদ ও রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে যুক্তিতর্ক সমন্বয়কদের রাজনৈতিক দল প্রসঙ্গে চৌদ্দগ্রামে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতা গ্রেফতার শিবির নেতা-কর্মীদের ক্যাম্পাসে ইসলামের সুমহান আদর্শ তুলে ধরতে হবে : কেন্দ্রীয় সভাপতি সঙ্কট উত্তরণে সামরিক সদস্যদের কাজে লাগানো সংস্কার-নির্বাচন নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই ‘হত্যা মামলার আসামি জিএম কাদের কিভাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে মিটিং করে’

সকল