২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

নির্যাতন-গঞ্জনা সইতে না পেরে গলায় ফাঁস নিলো মা-বাবা হারা রুমা

স্বামী-সন্তানের সাথে রুমা আক্তার - ছবি : সংগৃহীত

প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে করে অবশেষে স্বামীর নির্যাতন আর শাশুড়ির গঞ্জনা সহ্য করতে পারেনি রুমা আক্তার (২৫)। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

সোমবার সন্ধ্যায় তিনি সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না ঝুলিয়ে গলায় ফাঁস দেন বলে জানা গেছে। তবে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার বোন।

নিহত রুমা মধুখালী উপজেলার মেগচামীর মৃত রাজ্জাক মোল্লার ছোট মেয়ে। মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই তার। আপন বলতে আরেকটি বোন রয়েছে তার। চার বছর আগে পশ্চিম গাড়াখোলার মো: শওকত ফকিরের ছেলে সাগর শেখের (২৯) সাথে তার বিয়ে হয়। সাদাত নামে তাদের দেড় বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় পশ্চিম গাড়াখোলার বাসায় সাগরের সাথে কলহ হয় স্ত্রী রুমার। সাগর তাদের শিশুটিকে নিয়ে বাইরে চলে গেলে রুমের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন রুমা। বিষয়টি টের পেয়ে বাসার লোকেরা তাকে উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রুমার বড় বোন লাকি আক্তার বলেন, ‘আমাদের মা-বাবা কেউ নেই। সাগর প্রায়ই আমার বোনকে মারধর করতো। আমার কাছে ফোন করে প্রায়ই কান্নাকাটি করে সেই কথা বলতো রুমা। আমি তাকে সান্ত্বনা দিয়ে রাখতাম।’

লাকি অভিযোগ করেন, তার বোনকে মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি এর বিচার দাবি করেন।

এদিকে, রুমার মৃত্যুর পর তার একটি ফোনালাপ পাওয়া যায়, যেখানে সে তার উপরে স্বামী সাগর ও শাশুড়ি রাবেয়া বেগমের (৫০) নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে গেছে। রুমা সেখানে বলেন, অহেতুক কারণে তিনি শাশুড়ির নানা লাঞ্ছনা ও গঞ্জনার শিকার হতেন। এর কোনো প্রতিকার করতো না সাগর। বরং এসব জানার পরে স্বামী সাগর উল্টো আবার তার উপর নির্যাতন করতো। তাকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পেটাতো সাগর।

এ ব্যাপারে মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এফ এম নুরুজ্জামান বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement