২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

পদ্মার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে ২ শতাধিক পরিবার

- ছবি : নয়া দিগন্ত

শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলায় পদ্মার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে দু’ শতাধিক পরিবার। এতে স্কুল, মসজিদ, মাদরাসাসহ আরো আড়াই শতাধিক বসতবাড়ি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

জানা গেছে, এখনো ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে পাইনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তিনটি প্রথমিক বিদ্যালয়, তিনটি মজসিদ ও চারটি মক্তবসহ আড়াই শতাধিক বসতবাড়ি ও ছয় শ’ হেক্টর ফসলি জমি।

স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন জানায়, জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়া চরে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তাসহ পুনর্বাসনের জন্য তালিকা করে দ্রুত মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ভাঙন রোধ করতে দু’বছরে ৩০ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছে পাইনপাড়া চরে। পদ্মা সেতুর ৫০০ মিটার ভাটিতে চতুর্দিকে পদ্মা বেষ্টিত পাইনপাড়া এলাকার মাঝি কান্দি ও আহম্মদ মাদবর কান্দি গ্রামে এ চরের অবস্থান। প্রায় ২০ বছর আগে বিভিন্ন সময় নদী ভাঙনের কারণে কয়েক হাজার মানুষ এ চরে আশ্রয় নেয়।

আনোয়ার মাঝি বলেন, ‘পদ্মার ভাঙন আমার বাড়ির কাছে চলে আসায় বাড়িঘর ভেঙে অন্য জায়গায় নিয়ে যাচ্ছি। ভাঙনের কারণে এ চরের ২০০ অধিক পরিবার বাড়িঘর নিয়ে মঙ্গল মাঝির ঘাটসহ ওই এলাকার সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণ করছে। সেখানে আমাদেরকে সরকার কতদিন থাকতে দিবেন, তা আমরা জানি না। আমরা চাই দ্রুত নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিবেন।’

পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ইদ্রিস মজুমদার বলেন, ‘আমার জায়গা-জমি ও ভিটেবাড়ি যা ছিল, সব পদ্মা নিয়ে গেছে। আমরা এখন সর্বহারা হয়ে গেছি। এখন কাজকর্ম করে আয় করব সে জমিও নেই। পরিবার নিয়ে ডাল-ভাত খাওয়ার উপায়ও এখন নেই।

পূর্ব নাওডোবা ই্উপি চেয়ারম্যান মো: আলতাফ হোসেন খান বলেন, ‘এখানে ২৫ বছর আগে ৮৫০ হেক্টর এলাকা জুড়ে পাইনপাড়া চরটি জেগে ওঠে। তখন থেকেই ধীরে ধীরে এখানে বসতি গড়ে ওঠতে থাকে। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে পুরো চরটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে। তাই এ চরটি রক্ষায় জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।’

শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দেওয়ান রকিবুল হাসান বলেন, ‘বর্ষায় আমরা ভাঙন রোধে জরুরি উদ্যোগ নিয়ে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে থাকি। ইতোমধ্যে পাইনপাড়া চরে বিগত দু’বছরে ৩০ হাজারেরও বেশি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কতৃর্পক্ষকে জানাব। পরে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করব।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পাইনপাড়া চরের ক্ষতিগ্রস্ত ২০০ পরিবারকে জরুরি সহায়তা দিয়েছি। পুনর্বাসনের তালিকাও মন্ত্রনালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছি।


আরো সংবাদ



premium cement