২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দেশের সবচেয়ে ছোট চিল

-

আমাদের দেশের সবচেয়ে ছোট চিলের নাম জানো কি? দেশের সবচেয়ে ছোট বা ক্ষুদ্রতম চিলের নাম সাদা চিল। এর ওজন মাত্র ২০০ গ্রাম থেকে ৩৫০ গ্রাম। অর্থাৎ একটি সাধারণ ওজনের কবুতরের সমান। সাদা চিলকে আমাদের দেশের আবাসিক পাখিও বলা হয়। এক কথায় ওরা দেশি পাখি। এ চিলের নানা নাম রয়েছে। অঞ্চলভেদে সাদা চিলকে সাদাডানা চিল, আদা চিল, ট্যাপা চিল ইত্যাদি বলা হয়। ছিপছিপে গড়নের এ চিলকে অনেক সময় দেখতে গাংচিলের মতোও মনে হয়। পায়ের নখগুলো তীক্ষ্ণ ও ধারালো। শিকারের প্রধান হাতিয়ার পায়ের নখ ও বাঁকানো ঠোঁট। ধরা বা শিকারের জন্য কোনো কিছুকে নিশানা বা এইম করলে তার যেন মিস নেই। শিকারের সময় আকাশে স্থির হয়ে ওড়ে এবং নরম সুরে পিউই পিউই শব্দে ডাকতে থাকে। কিছু দেখা মাত্র ওপর থেকে ঝাঁপ দেয় নিচে।

খাদ্য হিসেবে এদের বেশি পছন্দ ছোট সাপ, ইঁদুর, ব্যাঙ, গিরগিটি, পোকামাকড় ইত্যাদি। এ পাখির ইংরেজি নাম ব্ল্যাক উইংড কাইট (Black-winged kite)। ব্ল্যাক শোল্ডারড কাইটও বলা হয়, ঘাড়ের কিছু অংশ কালো বলে। ডানার পালকের প্রান্ত বা শেষ অংশ কালো। ডানা বেশ লম্বা। দেহের নিচের অংশ সাদা। চোখ বেশ বড় ও লালচে। চোখের ওপরে কাজলরেখা। চোখের গোড়া হলুদ। পা, পায়ের পাতা ও আঙুল হলুদ। ফ্যাকাশে হলুদ দেহের ওপরেরটা। বুকে লালচে-বাদামি আভা থাকে অপ্রাপ্ত বয়সের পাখির পালকের। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে রংগুলো কমতে থাকে।

প্রাপ্তবয়স্ক সাদা চিলের দেহের দৈর্ঘ ৩৪-৩৯ সেন্টিমিটার। প্রসারিত ডানা ৮০-৯৮ সেন্টিমিটার। এ পাখির সায়েন্টিফিক নাম ইলেনাস সিরুলিআস (Elanus caeruleus)। বাংলাদেশ ছাড়াও চিলটির দেখা মেলে দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকাসহ আরো কিছু দেশে। ওরা একাকী বা জোড়ায় বিচরণ করে চর ও বনের ভেতরের উন্মুক্ত এলাকায়। প্রজননকাল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। প্রতি বছর ডালপালা দিয়ে বাসা বানায় একই জায়গার একই গাছে। প্রতি মৌসুমে ডিম দেয় ৪-৫টি। তা পাড়ে কয়কদিন পরপর। এ কারণে সব ছানা ডিম থেকে ফুটে বের হতে ৭-৮ দিন সময় লাগে। ডিম ফোটে ২৫-৩০ দিনে। ডিমের রং ফ্যাকাশে ঘিয়ে। ডিমে তা দেয় মেয়ে পাখি একাই। এমন অবস্থায় তাকে খাওয়ায় পুরুষ সাদা চিল।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement