মান্দালয়ের কথা
- সেলিম বুলবুল চৌধুরী
- ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
বলছি আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের (বার্মা) দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী মান্দালয়ের কথা। এর অবস্থান ইয়াংগুন থেকে প্রায় ৭১৬ কিলোমিটার উত্তরে, ইরাবতী নদীর তীরে । এটি একটি পুরোনো শহর। এখানে অনেক ঐতিহাসিক স্থান, সাংস্কৃতিক সৌধ ও বৌদ্ধ প্রাসাদ রয়েছে। বার্মার রাজা মিন্ডন ১৮৫৭ সালে মান্দালয়ে রাজধানী স্থাপন করেন। ১৯ শতকের ২০ দশকে এ দেশে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী শক্তি আগ্রাসন শুরু করে এবং আস্তে আস্তে তারা সম্পূর্ণ দেশই দখল করে নেয়। ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ বাহিনী মান্দালয় দখল করে নিলে বার্মা স্বাধীনতা হারায়।
মান্দালয় পাহাড়ের নামানুসারে মান্দালয় নগরীর নামকরণ করা হয়েছে। নগরীর উত্তর-পূর্ব কোণে পাহাড়টির অবস্থান। দীর্ঘ সময় ধরে এ পাহাড় পবিত্র পর্বত হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের ২ হাজার ৪০০ বছরপূর্তিতে এ পর্বতে একটি বড় নগরী গড়ে উঠবে, যা হবে কোনো বৌদ্ধ দেশের প্রধান নগর বা রাজধানী। রাজা মিন্ডন মান্দালয় নগরী প্রতিষ্ঠা করলে বুদ্ধের ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণতা পায়।
রাজা মিন্ডন মান্দালয়ে একই সময়ে অনেক স্বপ্নসৌধ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা দেয়ালসহ রাজকীয় নগরী বা দুর্গ, মহা লওকা মারাজেইন স্তূপ, পাঠাগার ইত্যাদি।
মান্দালয়কে ঘিরে মিয়ানিরা (বর্মি) স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও পারেনি। ব্রিটিশ বাহিনী মান্দালয় দখল করে নিলে বার্মার স্বাধীনতার শেষ আলো নিভে যায়। উনিশ শতকের শেষ দিকে মান্দালয় দখল করে ব্রিটিশরা মান্দালয় রাজপ্রাসাদকে সামরিক হেডকোয়ার্টারে পরিণত করে এবং এর নামকরণ করা হয় ফোর্ট ডাফেরিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) জাপানি বাহিনী বিমান হামলা করে ব্রিটিশ সামরিক হেডকোয়ার্টার ধ্বংস করে; মান্দালয় রাজপ্রাসাদ পুড়ে যায়। ১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীনতা অর্জন করলেও মান্দালয় রাজধানীর মর্যাদা ফিরে পায়নি। তবে এ নগরীকে নিয়ে বার্মার মানুষ এখনো গৌরব বোধ করে। তাই এখানকার পুরনো স্মৃতি রক্ষার্থে সরকার পুড়ে যাওয়া মান্দালয় রাজপ্রাসাদের জায়গায় নতুন রাজপ্রাসাদ গড়ে তুলেছে। টিকে থাকা অন্যান্য স্থাপনাও রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মান্দালয়ের সংস্কৃতি, শিল্পকর্ম, অতীত গৌরব আর বৌদ্ধ সাসানার জন্য মিয়ানিরা গর্ব বোধ করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা