২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পিরালু বৃত্তান্ত

-

বলছি পিরালুর কথা। এটি একটি ফুলগাছ। তোমরা কি কখনো পিরালু ফুল দেখেছ? এ ফুলের গাছ বেশি জন্মায় বন-পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে। লোকালয়ের পতিত জায়গার ঝোপঝাড়েও এ ফুলের গাছ মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। নদীর পাড়ে, জলাশয়ের কাছাকাছি জায়গায়ও জন্মায় এ গাছ। গাছটি এখন আগের মতো খুব বেশি একটা দেখা যায় না। কারণ, ঝোপঝাড় এখন আগের মতো পর্যাপ্ত নেই। বলা যেতে পারে, এ গাছ এখন প্রায় বিপন্ন। তবে প্রাকৃতিক আবাসে সংরক্ষণ করা যায় সহজেই। তাতে ফিরে আসবে এর বৈচিত্র্য।
এ ফুল বেশি দেখা যায় গ্রীষ্মের শুরুতে। বছরের অন্যান্য সময়েও দেখা যায় কমবেশি। এ ফুলগাছে শক্তিশালী কাঁটা হয়। ডালপালাও বেশ শক্ত। পিরালু ফুল দুই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা এবং প্রায় দেড় ইঞ্চি চওড়া হয়। ফুলের বোঁটা প্রায় দুই সেন্টিমিটার লম্বা হয়।
এ গাছের বাকল বা ছাল লালচে বাদামি। পাতা ডিম্বাকৃতির হলেও সামনের দিক কিছুটা গোলাকার। ফুল সাদা ও হলুদ রঙের । ফল পাকে ফাল্গুনে। চারা হয় বীজ থেকে। এর আদি আবাস মিয়ানমার, ভুটান, ভারত প্রভৃতি দেশ। অনেকে বলেছেন, এ গাছ সহজে চেনা যায় ফুল দেখে। আমাদের বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যানে বেশি করে এ গাছ লাগানো দরকার। আঞ্চলিক বিভিন্ন উদ্ভিদ উদ্যানেও রোপণ করা প্রয়োজন। কেননা, এ ফুলের গাছ এখন প্রায় দেখাই যায় না।
এ ফুলের ইংরেজি নাম ডিভাইন জেসমিন (উরারহব লধংসরহব)। বৈজ্ঞানিক নাম তামিলনাদিয়া উলিজিনোসা (ঞধসরষহধফরধ ঁষরমরহড়ংধ)। অনেক স্থানে এ ফুলের নাম বাখর বেঙেনা বা বন বেঙেনা। বাংলাদেশের মানুষ এ ফুলকে বলে পিরালু বা পেরালু। অনেক সময় পেডালুও বলে।
এ গাছের পাতা, ফুল, ফল ও বাকল বা ছাল দিয়ে ভেষজ ওষুধ তৈরি করা হয়; যা ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, ফোঁড়া, মাইগ্রেইন ইত্যাদির প্রতিষেধক । আয়ুর্বেদিতে এ ফলকে বলা হয় পিনডারা। অনেক দেশে এ গাছের পাতা হরিণ ও গরু-ছাগলের প্রধান খাদ্য।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement