জামের মিনার
- সেলিম বুলবুল চৌধুরী
- ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০৫
জানো, ‘জামের মিনার’ ঘোরি সাম্রাজ্যের অপূর্ব স্থাপত্য নিদর্শন। মিনারটি নির্মিত হয় ১২ শতকে। এটি বিজয়স্তম্ভ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। রাজধানী ফিরোজকোহ (ঋরৎড়ুশড়য) ধ্বংসের কারণে বাইরের দুনিয়ার মানুষ এ মিনারের কথা ভুলেই গিয়েছিল। ২০ শতকের ৫০-এর দশকে এটি আবার বিশ্ববাসীর নজরে আসে।
‘জাম’ পশ্চিম আফগানিস্তানের একটি স্থান। পর্বতমালায় ঘিরে থাকা উপত্যকা জামকে করেছে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। আর এখান দিয়ে বয়ে যাওয়া হারি নদীর শোভাও দৃষ্টিকাড়ানিয়া। এ মনোরম ভূদৃশ্যের পটভূমিকায় দাঁড়িয়ে আছে জামের মিনার বা বুরুজ। আর এ বুরুজের চার পাশে একসময় একটি বিশাল মসজিদ ছিল। কালের করাল গ্রাসে এখানকার সব স্থাপনা গেছে হারিয়ে, অতীতের জীবন্ত সাক্ষী হয়ে মিনারটি এখনো দাঁড়িয়ে। ধারণা করা হয়, স্থানটি একসময় ঘোরি সাম্রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী ছিল। আর এর নাম ছিল ফিরোজকোহ। এখানকার প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদ ও দুর্গের চিহ্ন বর্তমান। ইট, মাটির পাত্র, চুনাপাথর প্রভৃতি পোড়ানো বা শুকানোর জন্য ব্যবহৃত বড় চুল্লি বা ভাঁটির চিহ্নও আছে। আছে কবরস্থানের চিহ্ন।
জামের মিনার এবং প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন ২০০২ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব বিপন্ন ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পায়।
মিনারটি রোদে শুকানো ইটনির্মিত। ইটনির্মিত মিনারগুলোর মধ্যে উচ্চতায় এটি বিশ্বে দ্বিতীয়। আর সবচেয়ে উঁচু মিনারটি হচ্ছে দিল্লির কুতুব মিনার।
জামের মিনারের উচ্চতা ৬৫ মিটার (২১৩ ফুট)। এটি একটি অষ্টভুজাকৃতি ভিত্তির ওপর স্থাপিত। মিনারটি বৃত্তাকার হয়ে ওপরের দিকে উঠে গেছে। একসময় এতে দু’টি পেঁচানো সিঁড়ি ছিল যার সাহায্যে ওপরে ওঠা যেত। মিনারে কয়েকটি ঝুল বারান্দাও ছিল। আর ওপরের অংশে ছিল বাতি।
মিনারের অলঙ্করণ অসাধারণ। কুনিক ও নাস্খি হস্তলিপির সাহায্যে মিহি স্বচ্ছ প্রলেপের ওপর এ অলঙ্করণ।
মিনারে রয়েছে অভিলিখন। তবে এর লেখা এখন আর স্পষ্ট নেই। যত দূর পড়া যায়, তাতে মনে হয়, মিনারটি নির্মিত হয়েছিল ১১৯৩/৯৪ বা ১১৭৪/৭৫ সালে। ১১৯২ সালে দিল্লিতে গজনবীয়দের বিরুদ্ধে ঘোরি বংশীয় সুলতান গিয়াসুদ্দিনের বিজয় অথবা ১১৭৩ সালে ঘাজনায় ঘুজ তুর্কিদের বিরুদ্ধে বিজয়কে স্মরণীয় করতে মিনারটি নির্মিত হয়েছিল। ১২ ও ১৩ শতকে ঘোরিরা বর্তমান আফগানিস্তান, পূর্ব ইরানের অংশবিশেষ এবং উত্তর ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করত। এখন এসব শুধুই ইতিহাস। তবে আফগানরা তাদের অতীত নিয়ে গৌরব করতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা