২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইমাম শামিল

-

ইমাম শামিলের কথা বলছি। তিনি ১৯ শতকের বিখ্যাত ব্যক্তি; ককেশীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামরিক নেতাদের অন্যতম। উত্তর ককেশাসে রুশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। মুক্তিকামী জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ককেশীয় যুদ্ধে তার বীরত্বগাথা রুশ অধিকৃত ককেশাসের মুসলমানেরা এখনো স্মরণ করে।
ইমাম শামিল ১৮৩৪ থেকে ১৮৫৯ সাল পর্যন্ত দাগেস্তান ও চেচনিয়ার তৃতীয় ইমাম ছিলেন।
ইমাম শামিলের জন্ম ১৭৯৭ সালে দাগেস্তানের এক ছোট্ট গ্রামে। বর্তমানে দাগেস্তান রাশিয়ার অধীন। উনিশ শতকে এ এলাকা রুশরা দখলে নেয়।
ইমাম শামিলের জন্মের সময় রুশ সাম্রাজ্যের (রাশিয়া) প্রভাব বাড়ে এবং এটি বিশ্বের অন্যতম সামরিক শক্তিতে পরিণত হয়। ওই সময় বিশ্বের এক সময়ের শ্রেষ্ঠ সামরিক শক্তি ওসমানীয় সাম্রাজ্য (তুরস্ক) তার সামরিক মর্যাদা বেশ হারিয়েছে এবং পারস্য (ইরান) দুর্বল হয়েছে। এই সুযোগে রাশিয়া ককেশাসে প্রভাব বিস্তার করে এবং তুরস্ক ও পারস্যের অনেক এলাকা দখল করে। কিন্তু ককেশাসের মুসলমানেরা এই দখলদারিত্ব সহজে মেনে নেয়নি। তারা রাশিয়ার জারের (সম্রাট) শাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলে। রাশিয়া-ইরান যুদ্ধ (১৮০৪-১৮১৩) এবং রাশিয়া-তুরস্ক যুদ্ধের পরে রাশিয়া ককেশাসে জেঁকে বসে। এ অঞ্চলের জাতিগুলো সম্মিলিতভাবে রুশদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে। রুশদের বিরুদ্ধে ককেশীয় যুদ্ধের প্রথম দিককার নেতা ছিলেন শেখ মনসুর ও গাজী মোল্লা।
জমিদার পরিবারের সন্তান ইমাম শামিল ছিলেন গাজী মোল্লার বাল্যবন্ধু ও পরামর্শক। ১৮৩২ সালে গাজী মোল্লা গিমরি খণ্ডযুদ্ধে নিহত হলে শামিল এবং মোল্লার অপর মুরিদ মুরাদ আত্মগোপন করেন। রুশ ও ককেশাসের অনেক মানুষ মনে করেন শামিল মারা গেছেন। পরে তারা আত্মগোপন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসেন। ১৮৩৪ সালে মুরাদ নিহত হলে ইমাম শামিল ককেশাস প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রধান নেতা হিসেবে মুরাদের স্থান দখল করেন। এ সময় তিনি দাগেস্তানের তৃতীয় ইমাম হন। ১৮৩৯ সালে শামিল ও তার অনুসারীরা (যাদের সংখ্যা প্রায় চার হাজার পুরুষ, মহিলা ও শিশু) পার্বত্য শক্তিশালী ঘাঁটি আখোউলগোতে রুশদের অবরোধের সম্মুখীন হন। আট দিন ভয়াবহ যুদ্ধ চলে। রুশদের পক্ষে হতাহত হয় প্রায় তিন হাজার। অবশেষে রুশরাই জয়ী হয়। বিপ্লবীদের বেশির ভাগকে হত্যা করা হয়। তবে ইমাম শামিল ও তার পরিবার এবং কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হন। এরপর তারা আবার রুশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। কার্যকর গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে ১৮৫৯ সাল পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। পরে শামিল এবং তার পরিবার রুশ সেনাদের কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হন। ইমামকে রুশ সাম্রাজ্যের তৎকালীন রাজধানী সেন্ট পিটার্সবার্গে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রুশ সম্রাট তাকে হজ পালন করার অনুমতি দেন। পবিত্র নগরী মক্কায় হজ পালন করে তিনি মদিনায় যান এবং ১৮৭১ সালে এখানেই ইন্তেকাল করেন। জান্নাতুল বাকিতে তাকে কবর দেয়া হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
উগ্রবাদীদের হামলায় আইআরজিসির সামরিক উপদেষ্টা নিহত বাংলাদেশে আটার কেজি ৪০০ টাকা হোক, চান বিজেপি নেতা আ’লীগের আর কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দিবো না : মাসুদ সাঈদী উগ্রবাদীদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে : শফিকুল ইসলাম মাসুদ আইনজীবী হত্যায় হাসিনাকে আসামি করতে হবে : মামুনুল হক ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বান্দরবানে ইমাম-মুয়াজ্জিন ও মুসল্লিদের বিক্ষোভ সমাবেশ ‘লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি গাজায় যুদ্ধবিরতির পথ দেখাতে পারে’ আইনজীবী সাইফুলের কবর জিয়ারত করলেন ধর্ম উপদেষ্টা আমিরাতে গ্রেফতার আরো ৭৫ বাংলাদেশীর মুক্তি ইসকনকে নিষিদ্ধ না করলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি আলেমদের বিশ্বে দাবানলে সৃষ্ট বায়ুদূষণে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু

সকল