২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাংলার পিঠা

-

জানো, বাংলার শীতকাল আর পিঠা যেন এক সূত্রে গাঁথা। শীতকালে এ দেশের ঘরে ঘরে বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কৃষকের ঘরে হেমন্তে নতুন ধান ওঠার সাথে সাথে শুরু হয় পিঠা তৈরির কাজ। চলতে থাকে তা পুরো শীতকালজুড়ে। শীতে খেজুরের রস পিঠাকে করে তোলে আরো সুস্বাদু। কিন্তু সব পিঠা তৈরি করতে খেজুর রসের বা খেজুরের গুড়ের ব্যবহার করা হয় না। বেশির ভাগ পিঠাই মিষ্টিপ্রধান, কিছু পিঠা ঝালজাতীয়। তবে যে পিঠাই তৈরি করা হোক না কেন, পিঠার মূল উপকরণ চালের গুঁড়া। এ দেশে সারা বছর অন্তত শত রকমের পিঠা তৈরি করা হয়। এসব পিঠার মধ্যে চিতোই পিঠা, কুলি পিঠা, মুঠা পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, নকশি পিঠা, পাটি সাপটা, পাকান, ভাপা পিঠা, তেলে পিঠা, কুলশি, ছিট পিঠা, গোকুল পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, ফুলঝুরি পিঠা, কড়ি পিঠা, তেজপাতা পিঠা, চুটকি পিঠা, পাতা পিঠা, রসপুলি, কাটা পিঠা, মুরালি পিঠা, খান্দাশ, পয়সা পিঠা, চুষি পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা প্রভৃতি অন্যতম। একই পিঠার আবার এক-এক অঞ্চলে এক-এক নাম। এ দেশে শুধু খাওয়ার জন্যই যে পিঠা তৈরি করা হয় তা নয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষেও পিঠা তৈরি করা হয়। যেমন নতুন জামাইকে বরণ করে নেয়ার জন্য বানানো হয় বিবিয়ানা পিঠা। এ জন্য এ পিঠার আর এক নাম জামাই ভুলানো পিঠা। সব পিঠার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হলো নকশি পিঠা। গোলাকার, ডিম্বাকার, চৌকা, ত্রিকোণ প্রভৃতি নানা আকারের নকশি পিঠা এ দেশে বানানো হয়। এ দেশে এখন প্রায় সব অঞ্চলেই বানানো হয় ভাপা ও চিতোই পিঠা। চিতোই পিঠা খেজুর রসে ভিজালে হয় রস চিতোই, দুধে ভিজালে হয় দুধ চিতোই। কোথাও কোথাও চিতোই পিঠা কাচিখুচা পিঠা নামেও পরিচিত। এ দু’টি পিঠা এখন শহরের মানুষের কাছেও জনপ্রিয়। শহরে রাস্তার ধারে বসে এসব পিঠা বানিয়ে বিক্রি করা হয়। এ জন্য বিদেশীরা এসব পিঠার নাম দিয়েছেন স্ট্রিট কেক। হরেক রকম পিঠার মেলাও বসে শহরে। এ সবই আমাদের ঐতিহ্যের বাহক। ছবি : সংগ্রহ


আরো সংবাদ



premium cement