২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সোনাকান্দা দুর্গ

সোনাকান্দা দুর্গ -

জানো, এ দেশে যুদ্ধ ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক যেসব ঐতিহ্য রয়েছে তার মধ্যে লালবাগ দুর্গ, সোনাকান্দা দুর্গ, ইদ্রাকপুর দুর্গ ও হাজীগঞ্জ দুর্গ অন্যতম। সোনাকান্দা দুর্গ নারায়ণগঞ্জ থেকে উত্তর দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর বাম তীরে হাজী বাবা সালেহর মসজিদ ও মাজার থেকে মাইলখানেক দক্ষিণে অবস্থিত। একসময় ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা ও ব্রহ্মপুত্র নদের ত্রিমোহনার কাছে ছিল সোনাকান্দা দুর্গের অবস্থান। ভৌগোলিক পরিবর্তনে নদীগুলোর সে অবস্থান এখন বদলে গেছে। সোনাকান্দা দুর্গ মুঘল আমলে নির্মিত। ধারণা করা হয়, সতেরো শতকের প্রথম দিকে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে ঈশা খাঁ এই দুর্গটি নির্মাণ করেন। তবে মীরজুমলা না ঈশা খাঁ, কে এই দুর্গটি আসলে নির্মাণ করেছিলেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। এই দুর্গের নামকরণের সাথে একটি কিংবদন্তিও জড়িয়ে আছে। কাহিনীটি হলো, ঈশা খাঁ কেদার রায়ের বিধবা কন্যা সোনাবিবিকে দুর্গ থেকে উদ্ধার করে বিয়ে করেন। বিয়ের আগে সোনাবিবি এই দুর্গে অন্তরীণ ছিলেন। সেখানে সে সময় তিনি কাঁদতেন। সোনাবিবির কান্না থেকেই পরে দুর্গের নাম হয় সোনাকান্দা দুর্গ। তবে এ কাহিনীর সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত নয়।
দুর্গটি পূর্ব-পশ্চিমে ৩০০ ফুট লম্বা ও উত্তর-দক্ষিণে ২০৮ ফুট চওড়া। চুন-সুড়কি দিয়ে গাঁথা দেয়ালগুলো প্রায় সাড়ে তিন ফুট চওড়া ও ১০ ফুট উঁচু। দুর্গের পূর্ব দিকের অংশ আয়তাকার ও পশ্চিম দিক অর্ধ গোলাকার। দুর্গের অর্ধ গোলাকার অংশে একটি উঁচু বেদি আছে। সেখানে একটি প্লাটফর্ম আছে। ধারণা করা হয় সেখান থেকে কামান দাগা হতো। দুর্গের ভেতরে কোনো ভবন বা কক্ষ নেই। মুঘল শাসনামল শেষ হওয়ার পর এটি পরিত্যক্ত হয় ও ঘন জঙ্গলে ঢেকে যায়। পরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর এটিকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয়।
ছবি : সংগ্রহ


আরো সংবাদ



premium cement